ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

কক্সবাজারের চারটি আসনের ৯০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

তারেকুর রহমান, কক্সবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ৬ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ০৯:৪২, ৬ জানুয়ারি ২০২৪
কক্সবাজারের চারটি আসনের ৯০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

কক্সবাজারের চারটি সংসদীয় আসনে ৫৫৬টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রের ৯০ শতাংশই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। 

এ জেলায় চারটি সংসদীয় আসনে দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলে ২৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। যেখানে কক্সবাজার-১ আসনে ৭ জন, কক্সবাজার-২ আসনে ৬ জন, কক্সবাজার-৩ আসনে ৬ জন ও কক্সবাজার-৪ আসনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্যমতে, কক্সবাজার জেলার চার সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৬ লক্ষ ৫০ হাজার ৯৬০ জন। তন্মধ্যে, পুরুষ ভোটার ৮ লক্ষ ৭৩ হাজার ৪৮০ জন এবং মহিলা ভোটার ৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪৭৮ জন। হিজড়া ভোটার রয়েছে জেলার মধ্যে টেকনাফে মাত্র ২ জন। 

আরো পড়ুন:

চারটি আসনে ১১ হাজার ৯৭ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রিসাইডিং অফিসার ৫৫৬ জন, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ৩ হাজার ৫০৫ জন এবং পুলিং কর্মকর্তা ৭ হাজার ১০ জন। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়াও রয়েছেন ৯ জন সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা। ৫৫৬টি ভোটকেন্দ্রে বুথের সংখ্যা ৩ হাজার ৫০৫টি। 

কক্সবাজার জেলায় ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন, কক্সবাজার-১ আসনের চকরিয়া উপজেলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ হোসাইন, পেকুয়া উপজেলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট  ফাহমিদা সাত্তার, কক্সবাজার-২ আসনের কুতুবদিয়া উপজেলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাঈদীন নাহী, মহেশখালী উপজেলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোয়েব উদ্দীন খান, কক্সবাজার-৩ আসনের কক্সবাজার সদর উপজেলায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম) কৌশিক আহম্মদ খোন্দকার, ঈদগাঁও উপজেলায় সিনিয়র সহকারী জজ সায়মা আফরীন হীমা, রামু উপজেলায় সিনিয়র সহকারী জজ মো. ওমর ফারুক, কক্সবাজার-৪ আসনের উখিয়া উপজেলায় কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদ ও টেকনাফ উপজেলায় কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম।

জানা যায়, নির্বাচনী যেকোনো তথ্য অবহিতকরণের জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। নির্বাচনি অপরাধ দমনে ৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের আগে পরে পাঁচ দিনের জন্য নিয়োজিত রয়েছেন।

কক্সবাজার-১ আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৫২ জন। ভোটকেন্দ্র ১৫৮। এরমধ্যে পেকুয়া উপজেলায় ভোটকেন্দ্র ৪৪। যার মধ্যে ২২টিকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ ও বাকি ২২টিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
 
চকরিয়া উপজেলায় ভোটকেন্দ্র ১১৪। এর মধ্যে ৯৬টিকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ এবং ১৮টিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে প্রার্থীরা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম (ট্রাক), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম (হাতঘড়ি), ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম (হাতুড়ি), জাতীয় পার্টির হোসনে আরা (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন (মোমবাতি), স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি জাফরের পুত্র তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী তুহিন (ঈগল), স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুদ্দিন আরমান (কলার ছড়ি)।

এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপির মনোনয়নপত্র ঋণ খেলাপীর অভিযোগে বাতিল করা হলে পরে সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমকে দলীয় সমর্থন দেওয়া হয়।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৩৮ জন, ভোটকেন্দ্র ১১৮টি। এরমধ্যে মহেশখালীর ৮১টি ভোট কেন্দ্রের সব কটি কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং কুতুবদিয়া উপজেলার ৩৭টি কেন্দ্রের সব কটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
 
কক্সবাজার-২ আসনে প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক (নৌকা), বিএনএম এর প্রার্থী শরীফ বাদশাহ (নোঙর), ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ ইউনুস (মিনার), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (চেয়ার), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) মোহাম্মদ খায়রুল আমীন (একতারা), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (এনপিপি) মাহবুবুল আলম (আম)।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনে ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬১০ জন, ভোটকেন্দ্র ১৬৭। এর মধ্যে রামুতে ৬৪, কক্সবাজার সদরে ৭৬ ও নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলায় রয়েছে ৩৬টি ভোটকেন্দ্র। এসব ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৯০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনে প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল (নৌকা), জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারেক (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন (হাতঘড়ি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির শামীম আহসান ভুলু (কুড়েঁঘর), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মোহাম্মদ ইব্রাহিম (টেলিভিশন) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ (ঈগল)।

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৭১ জন, ভোটকেন্দ্র ১০৪। এরমধ্যে টেকনাফের ৫৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৪টিকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং উখিয়ার ৪৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৪টিকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে।

কক্সবাজার-৪ আসনে প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার (নৌকা), জাতীয় পার্টির নুরুল আমিন চৌধুরী ভুট্টো (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ফরিদুল আলম (আম), তৃণমূল বিএনপির মুজিবুল হক মুজিব (সোনালী আঁশ), ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ ওসমান গনি চৌধুরী (মিনার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ ইসমাইল (ডাব) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল বশর (ঈগল)।
 
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, কক্সবাজারের চারটি আসনের সব কটি কেন্দ্রকেই বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই কিংবা কোনো ধরনের গোলযোগের সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে এবং উৎসবমুখর করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। 

/টিপু/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়