ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১১ ১৪৩১

গাইবান্ধায় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস

গাইবান্ধা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪  
গাইবান্ধায় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস

গাইবান্ধায় শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত পাঁচ দিন জেলায় সূর্যের দেখা নেই। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান দুপুরে  রাইজিংবিডি-কে জানান, সকাল ৮টায় গাইবান্ধায় মৌসুমের সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ থেকে ৯৯ ভাগ। চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি জেলায় ভারি মেঘের কারণে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বেশ কয়েক দিন ধরে বয়ে চলা হাড়কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের ২০ লক্ষাধিক মানুষ। রাত নামলে ঘনকুয়াশা পড়ছে। সেইসঙ্গে কনকনে ঠান্ডা বাতাস বয়ছে।

আরো পড়ুন:

ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীত চেপে বসেছে তিস্তা, ঘাঘট, ব্রম্মপুত্র ও করতোয়া নদীবেষ্টিত এলাকায়। বেলা গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ঠাণ্ডা বাতাস। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলেও সূর্যের দেখা মেলে না। এতে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। ঠাণ্ডায় নাকাল হয়ে পড়ছে ছিন্নমূল, অসহায়, খেটে-খাওয়া দিনমজুর মানুষেরা।

শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। সকালের আলোতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে। যদিও রাস্তায় মানুষের সংখ্যা একেবারে কম। শীতের এই তীব্রতা প্রভাব ফেলেছে কৃষকের ধানের বীজতলায়।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের রিকশাচালক আমির হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘শীতের কারণে ২-৩ দিন ধরে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ঠান্ডার কারণে লোকজন কম বের হওয়ার তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আয়ও কমে গেছে।’ 

সদর উপজেলার কুপতলা ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের কৃষি শ্রমিক নুরুন্নবী, খয়বর, আসলাম ও মোশাররফ মিয়া বলেন, ‘তীব্র শীতে হাত-পা জমে যাওয়ার মতো অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে মাঠে বেশিক্ষণ থাকাটা কষ্টকর।’ 

শহরের নতুন বাঁধ এলাকার সনিয়া রানীর ভাষ্য, ‘ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ক্রমাগত ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করায় ২-৩টা কাঁথা-কম্বল দিয়েও শরীর গরম করা যাচ্ছে না।’

ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে নানা বয়সী মানুষ ভর্তি হচ্ছে। তাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। শীতজনিত কারণে গত সাত দিনে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে দেড় শতাধিক শিশু। 

গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মাহাবুব হোসেন বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শীতে শিশুদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি জানান, মায়েদের ঘনঘন বুকের দুধ দেওয়ার পাশাপাশি সন্তানকে বুকের উষ্ণতায় রাখতে হবে। রাতে প্রস্রাবের পরপরই পরিষ্কার করে গরম পোশাক পরিয়ে দিতে হবে। 

গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা জুয়েল মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, শীতার্ত মানুষের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এ পর্যন্ত জেলার সাত উপজেলায় ৪৫ হাজার কম্বল বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি সহযোগিতায় বিভিন্ন জায়গায় শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
 

মাসুম/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়