ঢাকা     শুক্রবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১২ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে ঠান্ডায় বাড়ছে শিশু রোগী

মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল, ঠাকুরগাঁও  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৭:০১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪
ঠাকুরগাঁওয়ে ঠান্ডায় বাড়ছে শিশু রোগী

ঠাকু‌রগাঁও‌য়ে শিশুদের নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বে‌ড়ে‌ছে। ফলে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া, হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ায় চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। 

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা মাত্র ৪৫টি। বর্তমা‌নে শিশু বিভাগে ভর্তি রয়েছে ১৮৫ জন শিশু। তাদের মধ্যে অন্তত ৭১ জন শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এছাড়া, গত এক মা‌সে বি‌ভিন্ন রো‌গে আক্রান্ত হ‌য়ে ১৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া শিশু‌দের ম‌ধ্যে অপরিপক্ব শিশু র‌য়ে‌ছে ১৩ জন, ঠান্ডাজ‌নিত রো‌গে আক্রান্ত হ‌য়ে দুইজন, হা‌র্টের সমস্যা নি‌য়ে একজন ও খিচুুনিসহ জ্বর নি‌য়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের শয্যাগুলোর প্রতিটিতে ৩ জন শিশুকে রেখে চিকিৎসা চলছে। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় অ‌নেক শিশুকে মেঝেতে রেখে স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। বে‌শির ভাগ শিশুরাই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত।  

আরো পড়ুন:

হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হওয়া এক শিশুর মা লায়লী বেগম ব‌লেন, শয্যার অভাবে মেঝেতে বিছনা পেতে থাকতে হচ্ছে। এর ফলে আমার সন্তান আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

বা‌লিয়াডাঙ্গী থে‌কে ডায়‌রিয়া আক্রান্ত এক বছর বয়সী মেয়ে শিশু‌কে গত মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালে ভ‌র্তি করিয়েছেন উত্তম কুমার। তি‌নি ব‌লেন, এখন পর্যন্ত ১ হাজার টাকার ওষুধ কি‌নে‌ছি। হাসপাতাল থে‌কে তেমন কোনো ওষুধ দেয়নি।

র‌ফিকুল ইসলাম না‌মে অপর শিশুর অ‌ভিভাবক ব‌লেন, দিনমজুরী ক‌রে সংসার চালায়। হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি  থে‌কেও বাইরে থে‌কে ওষুধ কিন‌তে হয়। টাকা নেই, কষ্ট হয় তবুও সন্তান‌কে তো বাঁচা‌তে হবে।

শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ সি‌নিয়র স্টার্ফ নার্স শিল্পী আখতার ব‌লেন, ১৫ জন নার্স ও তিনজন চিকিৎসক দি‌য়ে প্রতিদিন ১৮০ থে‌কে ২০০জন শিশু রোগী‌কে চি‌কিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে ৪৫ শয্যার বিপরীতে ১০০ জনের বেশি নতুন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। বিপুলসংখ্যক রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

হাসপাতালের শিশু রোগ বি‌শেজ্ঞ ডা. সাজ্জাদ হায়দার শাহীন বলেন ,শীতের এ সময়ে ভাইরা‌সের প্রবণতা বে‌ড়ে যায়। যার ফ‌লে শিশুরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া শিশু‌দের রোগ প্রতি‌রোধ ক্ষমতা কিছুটা কম ব‌লে তারা সহ‌জে আক্রান্ত হ‌চ্ছে। ঠান্ডাজনিত রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের প‌রিচ্ছন্ন রাখার পাশাপা‌শি ধু‌লাবা‌লি এ‌ড়ি‌য়ে চল‌তে হ‌বে। আর প্রয়োজনীয় সব টিকা দিতে হবে। সেই সঙ্গে শিশুর শরীর ঘামলে তা মুছিয়ে দেওয়া এবং যাতে ঠান্ডা না লাগে সে ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়