ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

ফরিদপুরে ব্রেইলি ব্রিজটি এখন স্বস্তির ট্রানজিট

ফরিদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪  
ফরিদপুরে ব্রেইলি ব্রিজটি এখন স্বস্তির ট্রানজিট

ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার ও নিউমার্কেটের সংযোগ স্থাপনকারী কুমার নদীর ব্রেইলি ব্রিজটি এখন স্বস্তির ট্রানজিট। সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর শহরকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত করার শুভ সূচনা হিসেবে এটাকে দেখছেন সাধারণ মানুষ।

লোহার ব্রিজ নামে পরিচিত এ ব্রেইলি ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কুমার নদী পারাপার হয়। শহরের বাইরের থেকে আসা মানুষ শহরের প্রবেশমুখে নেমে শরীয়তুল্লাহ বাজার হয়ে পায়ে হেঁটে নিউ মার্কেট, চকবাজার, থানার মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে এই সেতু দিয়ে। 

শুধু পায়ে হেঁটে চলার জন্য নির্মিত সেতুটি গত সাড়ে তিন বছর অবৈধ ফুটপাত দখলদারদের কাছে জিম্মি ছিল। টাকার বিনিময়ে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র পায়ে হাঁটার এই সরু সেতু হকারদের কাছে ভাড়া দিয়ে আসছিল। ফলে প্রতিনিয়তই নাজেহাল হতে হতো সাধারণ পথচারীদের। ছিনতাই, পকেটমারসহ ছোটখাটো অঘটন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। বিশেষ করে নারীদের জন্য এই সেতু ছিল অনিরাপদ। ভিড়ের সুযোগে যৌন হয়রানির ঘটনা ছিল নিত্যনৈমত্তিক। গত তিন দিন জনগুরুত্বপূর্ণ এই বেইলি ব্রিজটি হকারমুক্ত করে দিয়েছে প্রশাসন। ফলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দে নদীর এপার-ওপার যাচ্ছে।

সেতু পারাপারে সময় শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এমন পরিবেশ চেয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে। এমন পরিবেশ যেন এখন থেকে বজায় থাকে, সেই প্রত্যাশা তাদের। ব্রিজ পার হওয়া কয়েকজন নারী অকপটেই জানালেন তাদের আগের হয়রানির কথা। বেইলি ব্রিজটি জনগণের চলাচলের জন্য ফাঁকা করে দেয়ায় বর্তমান সংসদ সদস্য এ কে আজাদ ও ফরিদপুরের প্রশাসনের প্রতি ধন্যবাদ জানান তারা। 

ফরিদপুরের সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি শিপ্রা গোস্বামী বলেন, এই দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখে তিনি আনন্দিত। নতুন নেতৃত্ব শহরকে বসবাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন, এটাই নাগরিকদের প্রত্যাশা।

স্থানীয় হাজী শরিয়তুল্লাহ বাজারের ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ব্রেইলি ব্রিজের উপর অবৈধভাবে বিভিন্ন পণ্য বিক্রির কারণে মূল বাজারে লোকজনের আগমন কম ঘটতো। আমরা সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে, দোকান ভাড়া করে কর্মচারী রেখে ব্যবসা করি, অথচ একশ্রেণীর অসাধু লোক ওই ব্রিজের উপর হকার বসিয়ে চাঁদাবাজি করতেন। এটি বন্ধ হয়েছে, আজ তিন দিন আমরা স্বস্তিতে আছি। বাজারে ক্রেতাও বেড়েছে।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমি নিজে ফোর্স নিয়ে বেইলি ব্রিজ দখলমুক্ত করেছি। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেতু এখন থেকে দখলমুক্ত থাকবে। পাশাপাশি ফরিদপুর শহরের যেসব স্থানে অবৈধভাবে ফুটপাত দখলের কারণে জনগণের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, সেসব স্থান থেকে অভিযোগ পেলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ ও ডিবি পুলিশ সমন্বিতভাবে জনগণের স্বাভাবিক ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করবে।’
 

তামিম/বকুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়