বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনে চা শ্রমিকরা
সিলেট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বেতন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত তৃতীয় কিস্তি না পাওয়াসহ সাত দাবিতে সিলেটের তারাপুর চা বাগানে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার থেকে কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি শুরু করেছেন তারা। এরই অংশ হিসেবে রোববারও (১৪ জানুয়ারি) কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি অবস্থান, বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারাপুর চা বাগান শ্রমিক ও পঞ্চায়েত কমিটি।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে শুকনো মৌসুমের কলম বন্ধ থাকায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকদের ঘরে অভাব দেখা দিয়েছে। স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করতে পারছেন না তারা।
তারাপুর চা বাগানের শ্রমিক মমতা রায় বলেন, চা বাগানই আমাদের জীবন। আমরা চা বাগান বন্ধ থাকুক এটা চাই না। গত দুই সপ্তাহ ধরে কোনো বেতন ভাতা পাচ্ছি না। প্রতিটি ঘরে খাবারের অভাব রয়েছে। বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে আন্দোলন শুরু করেছি।
অপর শ্রমিক গীতা হালদার বলেন, জানুয়ারি মাসে কোনো বেতন ভাতা নেই। সন্তানদের স্কুলে ভর্তি যেমন করতে পারিনি, তেমনি নতুন ক্লাসের বইও কিনে দিতে পারছি না। আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনাটা চাই।
পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী বলেন, কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বারবার বেতন আটকে যাচ্ছে। এর ফলে শ্রমিক পরিবারে নানা সংকট বাড়ছে। বেতন না পাওয়ার কারণে সংক্রান্তি উৎসব পানসে হয়ে গেছে। আমরা অচলাবস্থার অবসান চাই। বারবার বাগান বন্ধ থাক আমরাও চাই না। বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় আন্দোলন করছি।
পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী বলেন, গত ২ সপ্তাহ ধরে বাগান শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছেন না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বকেয়া বেতনের তৃতীয় কিস্তিও আমরা পাচ্ছি না। অধিকার হারিয়ে, অধিকার পাবার দাবিতে আগামী মঙ্গলবার সকাল থেকে কঠোর আন্দোলন শুরু করবো।
তারাপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী বলেন, শ্রমিকরা বাগান বন্ধ রেখেছেন। বেতন ভাতা সংক্রান্ত সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
নূর/মাসুদ