ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

নড়াইলে পৌষ মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়

নড়াইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০২, ১৬ জানুয়ারি ২০২৪  
নড়াইলে পৌষ মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়

নড়াইল জেলা শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মুলিয়া ইউনিয়নের হিজলডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী পৌষ মেলা। শত বছরের এই মেলায় যোগ দিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশুরা ভিড় জমিয়েছিলেন। বিভিন্ন খবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছিলেন বিক্রেতারা।  স্থানীয় বাসিন্দারা এই মেলাকে পাগলচাঁদের মেলা বলে জানেন।

আধ্যাত্মিক সাধু পাগলচাঁদের স্মরণে প্রায় একশ বছর ধরে এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেলা কমিটির সভাপতি স্কুল শিক্ষক স্বপন কুমার রায়। বাক্যসিদ্ধ মহাপুরুষ পাগলচাঁদ অন্য এলাকা থেকে হিজলডাঙ্গায় এসে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। তিনি অনেক অলৌকিক ঘটনার অবতারণা করেন। ১৯৩৫ সালে পাগলচাঁদ মারা যান বলেও জানান সভাপতি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমদিকে স্বল্পপরিসরে মেলার আয়োজন করা হলেও বর্তমানে এটি এই অঞ্চলের সর্ববৃহৎ মেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। মেলা উপলক্ষে আসা ভক্তদের জন্য হিজলডাঙ্গার প্রতিটি বাড়িতে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। প্রত্যেক বাড়িতে মেলা উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনরাও বেড়াতে এসেছেন।

মেলা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষ দর্শনার্থী জড়ো হতে থাকেন। মেলায় বাহারি সব খাবার আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। নড়াইলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। সন্ধ্যার মোমবাতি প্রজ্বালন মেলার আকর্ষণকে আরও বাড়িয়ে তোলে। মেলায় এবার গ্রামীণ পণ্যসহ প্রায় ২০০টি স্টল বসেছে।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সরেজমিন দেখা গেছে, নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠেছে। মৃৎশিল্পের পাশাপাশি বস্ত্রশিল্পেরও দেখা মেলে এই মেলায়। মাটির তৈরি নানা তৈজসপত্র উঠেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্টলে আধুনিক খেলনার সমাহারও দেখতে পাওয়া যায়। নাগরদোলায় ওঠার জন্য শিশুদের লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বাহারি খাবার বিশেষ করে পাপড়, তিলের খাজা, কদমা, টক-মিষ্টি আচার এবং বিভিন্ন মিষ্টি কিনে বাড়িতে ফিরতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের।

মেলায় ঘুরতে আসা নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী মোহনা সাহা বলেন, এবার প্রথম মেলায় আসা। খুব আনন্দ লাগছে। 

যশোরের ধলগ্রাম থেকে মেলায় মিষ্টি পান বিক্রি করতে আসা শাহাবুল বলেন, প্রতিটি পান ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছি। অনেকে শখ করে পান কিনে খাচ্ছেন।

মেলার কমিটির উপদেষ্টা মুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই মেলার আয়োজন। পাগলচাঁদকে আধ্যাত্মিক সাধক মনে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখানে আসেন। পৌষ মেলায় আনন্দ পেতে অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও আগমন ঘটে। স্বল্প খরচে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীদের স্টলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বিনোদন শেষে যাতে শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন সে জন্য  পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শরিফুল/মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়