ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

গাইবান্ধায় সাড়া ফেলেছে পুলিশ সদস্যের বানানো অ্যাপস 

মাসুম লুমেন, গাইবান্ধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৯, ২১ জানুয়ারি ২০২৪  
গাইবান্ধায় সাড়া ফেলেছে পুলিশ সদস্যের বানানো অ্যাপস 

গাইবান্ধা জেলার সকল তথ্য নিয়ে বানানো একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপস তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন নাজমুল হাসান নামে এক পুলিশ সদস্য। 

এই বিশেষ অ্যাপস-এর নাম ‘আমাদের গাইবান্ধা’। ইংরেজিতে Amader Gaibandha লিখে গুগল প্লে স্টোরে সার্চ দিলেই পাওয়া যাচ্ছে জেলার প্রয়োজনীয় সব তথ্য।

অ্যাপসটির উদ্যোক্তা নাজমুল হাসান বাংলাদেশ পুলিশে ঢাকায় কর্মরত আছেন। তিনি গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামের জব্বার আলীর ছেলে।

অ্যাপসটিতে প্রবেশ করলে পাওয়া যাবে, গাইবান্ধা জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য, প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের চেম্বারের ঠিকানা, জেলার সাত থানা ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জরুরী মোবাইল নম্বর, ভৌগোলিক সীমারেখা, অ্যাম্বুলেন্স, জরুরী রক্ত সংগ্রহের জন্য ব্লাড ব্যাংক, ব্লাড ডোনারদের গ্রুপভিত্তিক তালিকা ও মোবাইল নম্বর, জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য, জেলা জজ আদালতের আইনজীবীদের মোবাইল নম্বর, গাইবান্ধা থেকে ছেড়ে যাওয়া সকল বাস কাউন্টারের তথ্য, বিদ্যুৎ অফিস, ট্রেনের সময়সূচি, হাসপাতালের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর, গাইবান্ধা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকাগুলোর ওয়েব সাইটের ঠিকানাসহ জেলার প্রয়োজনীয় সব তথ্য সুবিন্যস্ত আকারে সাজানো রয়েছে। সম্প্রতি গুগল থেকে ক্লিয়ারেন্স পাওয়ায় প্লে স্টোর থেকে যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে অ্যাপসটি ডাউনলোড করে অফলাইন ও অনলাইনে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।

নাজমুল ইসলামের ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হয় রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'নাজমুল ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলো। সে স্থানীয় রহমতপুর এমএম উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও তুলশীঘাট শামসুল হক ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান শাখা থেকে এইচএসসি পাশের পর পুলিশে যোগ দেয়।

তিনি আরও বলেন, 'পুলিশে চাকরি পাবার পর গাইবান্ধা সরকারি কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলেও কর্মব্যস্ততার কারণে আর পড়ালেখা করতে পারেনি নাজমুল। নাজমুল আমাদের গর্ব। তার উদ্ভাবিত অ্যাপসটি আমাদের গাইবান্ধাবাসীর জন্য আশির্বাদের মতো। এই অ্যাপস দিয়ে জেলার ২০ লক্ষাধিক মানুষ তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারবে।

মুঠোফোনে অ্যাপসটির উদ্যোক্তা নাজমুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অনেকদিন থেকেই  গাইবান্ধা জেলা নিয়ে একটি তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তোলার ইচ্ছে ছিলো। ২০২৩ সালের শুরুতে প্রতিদিন কাজ শেষ করে বাসায় এসে একটু একটু করে সময় দিয়ে জেলার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করি। এভাবে অধিকাংশ তথ্য সংগ্রহ করার পর আমি অ্যাপস তৈরিতে হাত দেই। অ্যাপস তৈরিতে প্রথমবার কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হলেও দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় সফল হই'। 

নাজমুল হাসান আরও বলেন, ডাক্তার, পুলিশ, গণমাধ্যম ফায়ার সার্ভিস বা ব্লাড ডোনার খুঁজতে গিয়ে মানুষ অনেক হয়রানি হতে হয়। ট্রেনের সময়সূচি, বাস কাউন্টারের নাম্বার না থাকায় অনেকসময় সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হয়।

তাছাড়া জেলার একজন বাসিন্দা হিসেবে জেলার কোথায় কি আছে, সেটাও জানা দরকার। আমার এই অ্যাপস মানুষের সেই চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করবে। অ্যাপসটিতে আরও নতুন নতুন তথ্য সংযোজন করতে হবে। আশা করছি, খুব দ্রুতই তথ্য সংযোজনের কাজ শেষ করতে পারবো। 

গাইবান্ধা জেলা তথ্য কর্মকর্তা হৃদয় মাহমুদ চয়ন বলেন, এমন অ্যাপস তৈরির তথ্য আমার জানা ছিলোনা। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। জেলার তথ্য নিয়ে এমন কিছুর উদ্ভাবন সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি তার এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে তাকে সব ধরনের সহযোগীতা করা হবে। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্যের আদান-প্রদান করা হবে।

/টিপু/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়