বান্দরবানে বন্য হাতির আক্রমণে ফসলের ক্ষতি
বান্দরবান প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বান্দরবানের রাঙ্গামাটি সীমান্তের রাজবিলা ইউনিয়ন এলাকার বন্যহাতির আক্রমণে কৃষকদের ফলজ বাগান, আদা, হলুদ, মরিচ ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাজবিলা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ঝাংকা পাড়া, ৮নং ওয়ার্ড এলাকা, ৯নং ওয়ার্ড রাবার বাগান সইক্ষ্যং পাড়া, তাইন খালী পাড়ায় গত ৭ জানুয়ারি থেকে আদা, হলুদ, কলা, পেঁপে, সাজিনা, মরিচ, বরই, আম, ঝাড়ু ফুলের বাগান হাতির পাল ক্ষতি করছে। ৯টি বড় হাতি ও ২টি ছোট হাতি তাণ্ডব চালিয়ে সব কিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে বলে জানান কৃষকেরা।
এলাকাবাসী জানান, তাঁরা সারা রাত আগুন জালিয়ে, বাঁশ ফুটিয়ে, আতশ বাজি ফুটিয়ে বাগান-ক্ষেত পাহারা দিচ্ছে। অনেক সময় রাস্তার পাশে জঙ্গলে হাতির পাল অবস্থান করে। তাই দিনের বেলায়ও রাস্তায় ভয়ে ভয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
ঝাংকা পাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হলেন, মংক্যচিং মারমা (পুসাচিং), অংসাচিং মারমা, মেস্যাং থুই মারমা, চথোয়াই মং মারমা, পাই মুই অং মারমা, অং সুই প্রু মারমা, সুইনু অং মারমা, সুই ক্যউ মারমা, বদে মারমা, পুথোয়াই চিং মারমা, ক্যউ চিং মারমা, মংবাচিং মারমাসহ শুধু ঝাংকা পাড়ার একটি গ্রামে প্রায় ৩০ জন রয়েছেন।
কৃষক অংশৈ প্রু মারমা জানান, কৃষি ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ৮০০ কলাগাছ, ৪ একর জমিতে ফুল ঝাড়ু, মরিচ, বরই বাগান করেন। হাতির পাল সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। তাঁর দাবি, হাতির পাল বাগান ফসলের ক্ষেত নষ্ট না করলে এ বছর সব বিক্রি করে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকা পেতেন।
তিনি আরও বলেন, গত এক মাস ধরে ১১টি হাতির পাল রাজবিলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ফলদ বাগান ও ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করছে। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দুধপুকুরিয়া অভয়রণ্যে হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার কারণে বিভিন্ন এলাকায় হাতির পাল ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নে ১১টি হাতি ঢুকে পড়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
রাজবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য অং প্রু মারমা বলেন, বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং তিনি নিজেও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দুর্দশার কথা অবহিত করবেন।
বান্দরবান বনবিভাগের রাজবিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, হাতির বিচরণ ক্ষেত্র হলো হাতি যেখানে বসবাস করে সেখান থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত। পানি ও খাবার থাকলে নিজেকে নিরাপদ মনে করলে হাতি সেখানে অবস্থান করে। তবে খাদ্যের অভাব হলে হাতি বাইরে চলে আসে।
চাইমং/বকুল