ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

প্রেমের টানে খুলনায় আসা অস্ট্রেলিয়ান চিত্রশিল্পী ম্যালকম মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৭, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ২২:৩০, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪
প্রেমের টানে খুলনায় আসা অস্ট্রেলিয়ান চিত্রশিল্পী ম্যালকম মারা গেছেন

দীর্ঘ ২০ বছর আগে প্রেমের টানে খুলনায় আসা অস্ট্রেলিয়ার চিত্রশিল্পী ম্যালকম কেইথ আরনল্ড (৭৬) মারা গেছেন। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে সোনাডাঙ্গা এলাকার ভাড়া বাড়িতে তিনি মারা যান। এই চিত্রশিল্পী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

ম্যালকম কেইথ আরনল্ড ২০০৪ সালে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার পেড়িখালি গ্রামের মেয়ে হালিমা বেগমকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তিনি খুলনায় বসবাস করতে শুরু করেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ম্যালকম কেইথ আরনল্ডের মৃত্যুর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে ডকুমেন্ট পাঠানো হয়। দূতাবাস থেকে মরদেহ দাফনের অনুমোতি দিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। তারা স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে বসুপাড়া কবরস্থানে মরদেহ দাফন করবেন।

স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতের খাবার ও ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ম্যালকম কেইথ আরনল্ড। ভোরে তার ঘন ঘন শ্বাস নেওয়ার শব্দ শুনে দৌঁড়ে যায়। তখন তিনি মুখের স্প্রে দিতে বলেন। কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। তবুও, আমরা তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

তিনি আরও বলেন, তিনি (ম্যালকম কেইথ আরনল্ড) স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা ছিল তার।

হালিমা বেগম বলেন, খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন তিনি। আমার জন্য ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবার রয়েছে। আমি বলতাম আপনি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান। কিন্তু, ম্যালকম কেইথ আরনল্ড বলতেন তুমি ছাড়া আমার খেয়াল কেউ রাখতে পারবে না। আমি এ দেশেই থাকবো। এমনকি মারা গেলেও এই দেশের মাটিতে আমাকে দাফন করো।

হালিমা বেগম বলেন, আমি অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, বাংলাদেশে তাকে দাফন করলে সমস্যা নেই। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি। তারা অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসকে জানিয়েছেন। সেখান থেকে অনুমতিও পেয়েছি। কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো সংগ্রহ করে বসুপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে। কখন তাকে সমাহিত করা হবে সে সময় এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

হালিমা বেগম বলেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর তিনি মোংলায় ওয়ার্ল্ড ভিশনে কাজ করতেন। ২০০১ সালে ম্যালকম কেইথ আরনল্ড মোংলায় এলে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। হালিমার বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার পেড়িখালি গ্রামে। পরে তিনি অসুস্থ হলে ম্যালকম কেইথ আরনল্ডকে চিঠি পাঠান। ২০০৩ সালে ম্যালকম কেইথ আরনল্ড বাংলাদেশে এসে হালিমা বেগমের চিকিৎসা করান। এরপর ম্যালকম কেইথ আরনল্ড হালিমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ম্যালকম কেইথ আরনল্ড ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ২০০৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি হালিমা বেগমকে বিয়ে করেন।

নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়