ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২১ ১৪৩১

ধানের চারার হাট

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫২, ২৯ জানুয়ারি ২০২৪  
ধানের চারার হাট

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের শিমুলতলায় ধানের চারার হাট বসেছে। এই হাটে চারা কেনাবেচা করছেন আশপাশের কয়েক জেলার কৃষক। একদিকে ন্যায্য দামে চারা বিক্রি করতে পেরে খুশি বিক্রেতারা, অন্যদিকে স্বল্পমূল্যে কিনতে পেরে লাভবান কৃষক।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সরেজমিনে শিমুলতলার হাটে গিয়ে দেখা গেছে, পিকআপ, ভটভটি, ব্যাটারিচালিত ভ্যানে চারা আসছে। ৮০ আঁটিতে এক পৌন হিসেবে বিক্রি হচ্ছে এসব চারা। রকমভেদে পৌনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়।

কৃষকরা জানান, রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার লোকজন এখানে চারা বিক্রি করতে আসে। প্রতিবছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে ধানের চারার হাট। জিরা, আটাশ, ছিয়াত্তরসহ বিভিন্ন ধানের চারা পাওয়া যায় এখানে।

আব্দুর রহিম নামের এক কৃষক বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের অনেক এলাকায় ধানের চারা তৈরি করতে গেলে পদে পদে বাধাগ্রস্ত হতে হয়। এ কারণে এখানকার কৃষক ধানের বীজতলা তৈরি করে না। শিমুলতলার হাট থেকে চারা কিনে লাগায়।

তিনি বলেন, সাধারণত ধানের চারা তৈরি করতে গেলে উন্নতমানের বীজ সংগ্রহ করে জমি প্রস্তুত করে বুনতে হয়। নিয়মমাফিক সেচসহ নানা শঙ্কা মাথায় নিয়েই ধানের চারা তৈরি হয়। সেই চারা শ্রমিক দিয়ে তুলে আবার জমি প্রস্তুত করে লাগানো হয়। এতসব প্রক্রিয়ায় কৃষকের অনেক টাকা গচ্চা যায়। ঝুট ঝামেলায় না গিয়ে সাধারণ কৃষক হাট থেকে চারা কিনে লাগায়।

চারা কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক বলেন, বীজ থেকে ধানের চারা তৈরিতে অনেক প্রক্রিয়া আছে। শ্রমও লাগে অনেক। তাই হাট থেকে চারা কিনে জমিতে ধান লাগালে অনেক লাভবান হওয়া যায়।

রাজশাহীর মহোনপুরের বাসিন্দা আব্দুল কাদের মন্ডল। ২০ বছর ধরে এই হাটে ধানের চারা বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে ধানের চারা বিক্রি করতে আসি। কৃষকরাও আগ্রহ করে চারা কিনে। দিনের চারা দিনেই বিক্রি হয়ে যায়। চারা বিক্রি নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না।

নওগাঁর মান্দা থেকে ধানের চারা বিক্রি করতে আসা দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাজশাহী, নওগাঁ বা বগুড়ায় ধানের চারার হাট নেই। শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিমুলতলায় আছে। এখানে অনেক রকম ধানের চারা বিক্রি হয়।

শিমুলতলার ধানের হাট গত বছর থেকে ইজারা দিচ্ছে ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদ। ইজারাদারদের পক্ষে দেখভাল করছেন নাজিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি।

তিনি বলেন, মাঘ মাস থেকে চৈত্র মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত এ হাট বসে। টানা আড়াই মাস বেচাকেনা হয় ধানের চারা। প্রতিদিন ১৫-২০ গাড়ি ধানের চারা বেচাকেনা হয়। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই লাভবান হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পলাশ সরকার বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের অনেক মানুষ বীজতলায় চারা প্রস্তুত করে বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে থাকেন। এসব চারার গুণগত মান অনেক ভালো।

মেহেদী/কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়