ঢাকা     সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৮ ১৪৩১

স্ত্রী হত্যা মামলা: স্বামী গ্রেপ্তার

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪০, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১২:৪৩, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪
স্ত্রী হত্যা মামলা: স্বামী গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে স্ত্রীকে শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার অভিযোগে রুবেল হোসেন (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। রুবেল হোসেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে। পেশায় তিনি একজন রডমিস্ত্রি।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বাড়িতে স্ত্রী ঝর্না খাতুনকে (২৪) নৃশংসভাবে খুন করে পালিয়ে যান। পরে রাত ১১টার দিকে রাজশাহীর কাটাখালী থানার মাসকাটাদীঘি এলাকায় বন্ধুর বাড়ি থেকে র‌্যাব-৫ রাজশাহীর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস।

তিনি বলেন, ঝর্না এক সন্তানের মা ছিলেন। তিনি অত্যন্ত ধার্মিক ও পরহেজগার প্রকৃতির নারী ছিলেন। এলাকার লোকজন তাকে ভালো বলেই জানেন। তারপরও রুবেল হোসেন তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়া প্রেমে জড়ানোর অভিযোগ তোলেন। যদিও এ ব্যাপারে তার কাছে কোনো ধরনের প্রমাণ ছিল না।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি রুবেল তার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চান। বলেছিলেন, আর কখনও স্ত্রীকে মারধর করবেন না। তাকে যেন একটিবার সুযোগ দেওয়া হয়। তিনি ভাল হয়ে যাবেন। তার এমন প্রতিশ্রুতিতে ঝর্না আবার স্বামীর বাড়ি আসেন। কিন্তু রুবেল তার স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা একসঙ্গেই শুয়ে পড়েন। ভোররাতে রুবেল উঠে তার মা ও বোনের ঘর বাইরে থেকে আটকে দেন। এরপর শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ঝর্নাকে নৃশংসভাবে খুন করে পালিয়ে যান।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, রুবেল একজন মাদকাসক্ত। দুটি বেসরকারি সংস্থায় তার ঋণ আছে। ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে তিনি মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। স্ত্রীকে হত্যার পর রুবেল প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এজন্য রাজশাহী শহরে এসে বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপন করেন। ঘটনার পর থেকে র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করেছিল। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামি রুবেলকে বাগমারা থানায় হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।

ঝর্নাকে হত্যার অভিযোগে সোমবারই তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় রুবেল ছাড়াও তার মা ও বোনকে আসামি করা হয়। তবে রুবেল র‌্যাবের কাছে দাবি করেছেন, মা ও বোন হত্যাকাণ্ডে যেন বাধা দিতে না পারেন তার জন্য তিনি তাদের ঘরের দরজার ছিটকিনি বাইরে থেকে আটকে রেখেছিলেন। খুন করেছেন তিনি একাই।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই পলাতক। আমরা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি।

মা ও বোনকে ঘরে আটকে রাখার বিষয়ে রুবেলের জবানবন্দীর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রুবেল র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার বলে শুনেছি। সে তো আমাদের কাছে এখনও আসেনি। আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হলে তাকে আমরাও জিজ্ঞাসাবাদ করব। সবকিছু শুনব।

/কেয়া/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়