ফেনী বাণিজ্যমেলায় স্টল পান না স্থানীয় ব্যবসায়ীরা
ফেনী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
ফেনীর ওয়াপদা মাঠে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্যমেলার আয়োজন হলেও মেলায় স্থান পান না স্থানীয় উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা। এবারও মেলায় দেড় শতাধিক স্টল বরাদ্দ দেয়া হলেও এ তালিকায় নেই স্থানীয় উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীর নাম। ফেনীর ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে স্টলের বিষয়ে আলোচনা করলে মেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, সব স্টল বুকিং হয়ে গেছে। মেলা সিন্ডিকেট বা সমিতির আওতাভুক্ত ব্যবসায়ীরা মূলত স্টল পেয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন ফেনী শিল্প ও বাণিজ্যমেলা বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান মুক্তিযোদ্ধা হেল্প ফাউন্ডেশনের মালিক মো. ফরহাদ।
মো. ফরহাদ এ প্রতিবেদককে বলেন, মেলায় স্টল পাওয়া ব্যবসায়ীরা ভিন্ন ভিন্ন জেলার ব্যবসায়ী। এরা মূলত মেলা নির্ভর ব্যবসা করে থাকে। মেলায় অংশ নেয়া ব্যবসায়ীদের একটা সমিতি আছে। তারাই এখানে স্টল পায়। ঝামেলা এড়াতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের স্টল দেয়া থেকে বিরত থাকা হয় বলে জানান তিনি।
মেলায় স্টল নিয়েছেন এমন এক ব্যবসায়ী বলেন, তার বাড়ি চাঁদপুর৷ তিনি গত ২০ বছর ধরে বিভিন্ন মেলায় ঘুরে ঘুরে ব্যবসা করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মেলা অনুষ্ঠিত হলে সমিতির মাধ্যমে তাকে বলা হয়। এসব মেলায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খুব-একটা দোকান দেন না বলে জানান তিনি।
ফেনী চেম্বারের আয়োজনে বাণিজ্যমেলায় চায়না ও ভারত থেকে আনা বিদেশি পণ্যের বেচাকেনা হয় বলে অভিযোগ করেন ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী। এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘ফেনী শহরের ব্যবসায়ীরা করোনা কালের ধকল কাটিয়ে এখনও উঠতে পারেনি। এরমধ্যে বছরে ২/৩টি মেলা আয়োজন হলে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক লসের সম্মুখীন হতে হয়। বাণিজ্য মেলায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কেউই সুযোগ পায় না। এ বিষয়ে চেম্বার অব কমার্স কখনও আমাদের সঙ্গে আলোচনাও করে না।’
তিনি আরও বলেন, দেশীয় পণ্য সামগ্রী ও স্থানীয় ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের সুযোগ না দিয়ে বিদেশি পণ্য বেচাকেনার প্রদর্শনী করা হয় বলে তারা বরাবরই এ মেলার বিরোধিতা করেন।
ফেনী শহরের এক প্রসাধনী ব্যবসায়ী বলেন, মেলায় যে সমস্ত প্রসাধনী বিক্রি হয় এগুলো অধিকাংশ মানহীন। কমদামে পাওয়া যায় বলে মানুষ এসব পণ্য কেনেন ঠিকই, তবে মানের দিক বিবেচনা করলে ক্রেতারা ঠকে যান।
আইয়ুব নামে এক ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা আমাদের জেলায় এসে ব্যবসা করে যান। তাদের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। এটি নিয়ে ব্যবসায়ীদের ভেতর চাপা ক্ষোভ রয়েছে।’ মেলায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুযোগ দেয়ার দাবি জানান তিনি।
সাইফুল ইসলাম নামে এক কাপড়ের ব্যবসায়ী বলেন, মেলার অধিকাংশ পণ্য ঢাকার বিভিন্ন গার্মেন্টসের রিজেক্ট করা পণ্য। সাধারণ ক্রেতারা এটা বুঝে না। ফলে কম দামে এসব পণ্য কিনে প্রতারিত হয়।
সাহাব/বকুল