একইমঞ্চে আ.লীগ-বিএনপি-জাপার নেতারা, শুনলেন তরুণদের প্রত্যাশা  

নীলফামারীর তরুণরা কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, সরকারি সেবা আরও সহজে পেতে চান। একইসঙ্গে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়ায় তরুণদের মতামত গুরুত্ব দেয়ারও আহ্বান জানান।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) জেলা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে দিনব্যাপি ‘আমিও জিততে চাই’ ইয়ুথ ফেয়ারে অংশ নেয়া নীলফামারীর একাধিক তরুণ বলেন, একদিকে চাকরির সুযোগ যেমন কম, অন্যদিকে উদ্যোক্তা হতেও রয়েছে জটিল সব প্রতিবন্ধকতা। তরুণদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সহজ ঋণসুবিধার দাবি জানান তারা।

এ ছাড়া সরকারের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবার মানের উন্নতি, নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রাধান্য দেয়া, নিরাপদ পানি সরবরাহ, পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশা নিধনের কার্যক্রম জোরদার করতে তাগিদ আসে তরুণদের কাছ থেকে।

মেলায় অংশ নেয়া তরুণরা বলেন, বেশিরভাগ তরুণ রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছেন এবং তারা রাজনৈতিক আলোচনায় আগ্রহী নন। কারণ তারা মনে করেন, তাদের মতামত সেভাবে গুরুত্ব পায় না। দেশের উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে, তরুণদের প্রত্যাশা গুরুত্ব দেয়ার জন্য নীতিনির্ধারক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তারা।

এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও যুব সংগঠনের শতাধিক তরুণ অংশ নেন। এ সময় নাগরিক ইস্যু নিয়ে বিতর্ক, কুইজ ও ভিডিও বার্তা তৈরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।  

ইউএসএআইডি-এর অর্থায়নে স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের আওতায় ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনটি রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীদারদের কাছে নাগরিকদের প্রত্যাশা তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। দিনব্যাপী এই তারুণ্যের মেলায় অংশ নেন নীলফামারী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিকুল ইসলাম রিন্টু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম সাজ্জাদ পারভেজ, জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আমিন স্বপন এবং জেলা মহিলা দলের সভাপতি তাসনিম ফৌজিয়া ওপেন। এ সময় তারা তরুণদের তুলে ধরা নানা ইস্যু শোনেন এবং সেই অনুযায়ী নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন।

ইয়ুথ ফেয়ারের অংশ হিসেবে আয়োজিত ‘আমিও জিততে চাই আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায়’ অংশ নেন তরুণরা। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিল শিশির বিন্দু ডিবেটিং সোসাইটি। প্রতিযোগিতায় নীলফামারীর ৮টি বিতর্ক দল অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় বিতার্কিকরা নাগরিক ইস্যুর সমাধান বিষয়ে নানা যুক্তি ও পাল্টাযুক্তি তুলে ধরেন।

মেলায় ভিডিও বার্তা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তরুণদের আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। এককভাবে ক্যামেরার সামনে দুই মিনিটে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। 

ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের রাজনৈতিক ফেলোদের উদ্যোগে এ মেলার শুরুতে নাগরিক সমস্যা তুলে ধরে রংপুর নাট্যকেন্দ্র ‘জুলেখার জীবন’ নামে মঞ্চনাটক পরিবেশন করে। এর উপর ভিত্তি করে আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেলে পুরস্কার বিতরণী ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।