মুক্তিপণ দিয়েও মুক্তি মিলল না ব্যবসায়ীর

কুমিল্লার দেবিদ্বারে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার বাগুর বাসস্টেশনের উত্তর পাশের এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মুছা আলী (৪০) কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার উত্তর নাজির পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জুতা ও কাপড়ের ব্যবসা করতেন। বিয়ে করেছেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের তুলাগাঁও গ্রামে।

নিহতের স্ত্রীর বরাতে পুলিশ জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফোন পেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন মুছা। রাত ৯টার দিকে মুছার নম্বর থেকে রাজিয়াকে কল দিয়ে জানানো হয়, তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। টাকা দিলে ১০ মিনিটের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে অপহরণকারীদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পরিবারের লোকজন খবর পান, মুসাকে হত্যা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, কয়েকজন যুবক মুসাকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্ত্রী রাজিয়া আক্তার বলেন, আমার স্বামী ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে কাপড়, জুতা ও কসমেটিকস নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার জামতলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশের দোকানে বিক্রি করতেন। বুধবার রাতে সোহেল নামের একজন পরিচিত ব্যক্তির কল পেয়ে বাসা থেকে বের হন।

‘যারা আমার স্বামীকে আটক করেছিল তারা প্রথমে ১০ লাখ টাকা চেয়েছিল, পরে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে বিকাশে ৩০ হাজার টাকা পাঠানোর পরেও কেন আমার স্বামীকে হত্যা করা হলো।’- বলেন রাজিয়া।

দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নয়ন মিয়া বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে তিনটি মাদক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গত রোববারও কুমিল্লার আদালতে একটি মাদক মামলার হাজিরা ছিল মুছার।

তিনি আরও বলেন, ঘটনায় জড়িতরা মুছার পূর্ব পরিচিত ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে মাদক কিংবা আর্থিক বিরোধ থাকতে পারে। তবে তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।