ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

ফরিদপুরে জসীম পল্লী মেলার উদ্বোধন

ফরিদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
ফরিদপুরে জসীম পল্লী মেলার উদ্বোধন

ফরিদপুরে গোবিন্দপুর গ্রামে পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের ১২১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুরু হয়েছে ১৯ দিনব্যাপী জসীম পল্লী মেলা। 
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসন ও জসীম ফাউন্ডেশন’র আয়োজনে বেলুন উড়িয়ে ১৯ দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করা হয়।

পল্লীকবির বাড়ির সামনে কবির স্মরণে জসীম পল্লী মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও কবির ছোট জামাতা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

উদ্বোধন শেষে মেলার মঞ্চে জেলা প্রশাসক ও জসীম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর-৩ আসনের এমপি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.কে. আজাদ, ফরিদপুর-২ আসনের এমপি শাহাদাব আকবর চৌধুরী লাবু, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। বরেণ্য অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কবি পুত্র ড. খুরশিদ আনোয়ার। উপস্থিত ছিলেন কবি পুত্র ড. জামাল আনোয়ার, কবি কন্যা আসমা জসীম উদ্দীন তৌফিক।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, হাজার বছর পরেও যদি কেউ খুঁজে পেতে চায় কেমন ছিল আবহমান বাংলার প্রকৃতি, কেমন ছিল মানুষের জীবন যুদ্ধের চিত্র তা খুঁজে পাওয়া যাবে জসীম উদ্দীনের গল্প, কবিতা, নাটক ও গানে। সময়ের সাথে নদ-নদী, প্রকৃতি ও জীবন ধারায় পরিবর্তন আসবে সেটাই স্বাভাবিক,  কিন্তু সেই পরিবর্তনের রূপরেখা ও বিবর্তনের ধারা ফুটে উঠে লেখক ও কবিদের অমর লেখনীতে। সমসাময়িক কবিরা তাকে শুধুমাত্র পল্লীকবির খেতাব দিয়ে একটি নির্দিষ্ট গন্ডিতে আবদ্ধ করতে চাইলেও তাকে নিয়ে যতই গবেষণা হবে; যত মানুষ তার সাহিত্য নিয়ে কাজ করবে; দেখা যাবে তিনি আসলে শুধু পল্লীকবি নন, এই জনপদের মাটি ও মানুষের হৃদয়ের কন্ঠস্বর।

তিনি আরও বলেন, মানুষের জীবন সংগ্রাম, সমাজের শোষণ নিপীড়ন, দরিদ্র মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কষ্টের কথকতা, মানুষের মধ্যে বৈষম্য ও ভেদাভেদের কথা ছবির মত ফুটে উঠেছে কবির অমর সব সাহিত্য রচনায়। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও সমতার পক্ষের প্রকৃতিপ্রেমী একজন সর্বজনীন কথাসাহিত্যিক।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ.কে. আজাদ বলেন, পল্লীকবি জসীমউদ্দীন ফরিদপুরের ঐশ্বর্যকে সারা বাংলায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, পৌঁছে দিয়েছিলেন সারা বিশ্বে। তার অমর সকল সাহিত্যকর্ম দিয়ে বাংলার সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন। তার স্মরণে প্রতিবছর গ্রামীণ মেলা করতে পেরে আমরা ফরিদপুরবাসী যেমন গর্বিত বোধ করি পাশাপাশি এই মেলার মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের কাছে কবির জীবন ও কর্মের কথা ছড়িয়ে দিতে পারি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত ফরিদপুর চাই। ইতিমেধ্যই ফরিদপুরের জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এই ব্যাপারে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।

এ.কে. আজাদ বলেন, এই মঞ্চে ফরিদপুর-২’র এমপি শাহাদাব আকবর চৌধুরীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা রয়েছেন। ইতোমধ্যেই জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি, কাজ ও শুরু করেছি। তিনি ফরিদপুর অঞ্চলের যোগাযোগ, শিল্প ও বাণিজ্য এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের ব্যাপারে ইঙ্গত দিয়ে বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য সমন্বিতভাবে আমরা কাজ করবো। সেই লক্ষে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে শুরু করা হয়েছে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ। এর পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করবো।

মেলায় প্রায় ২ শত স্টল তাদের গ্রামীণ নানা পশরা সাজিয়েছে। এছাড়াও মেলায় সার্কাস, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রাইড। সেই সাথে মেলার মঞ্চে জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন পল্লীর জারি সারি গান ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নানা নাটক মঞ্চায়িত হবে।

তামিম/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়