ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিহত জিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৬, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিহত জিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তারে প্রতিপক্ষের হামলা ও গুলিতে নিহত জিয়া হোসেনের (৪৫) পরিবারকে নগদ দুই লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বের কালোয়া মোড়ে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী রিনা খাতুনের হাতে তিনি এ সহায়তা তুলে দেন। এছাড়াও নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকারি ও বেসরকারিভাবে জিয়ার পরিবারকে সাহায্য ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ।

এসময় নিহত জিয়ার স্ত্রী রিনা খাতুন ও স্বজনরা সংসদ সদস্যের কাছে জিয়া হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান। জিয়া কয়া ইউনিয়নের বের কালোয়া গ্রামের মৃত কেঁদো শেখের ছেলে। তিনি পেশায় একজন জেলে ও পাঁচ কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন।

সহায়তা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল হক স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াছির আরাফাত তুষার, যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, যুবলীগ নেতা জিয়াদুল ইসলাম মিলন, জিয়া হত্যা মামলার বাদী ইয়ারুল আলী প্রমুখ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বের কালোয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল খালেকের সাথে মৃত কেঁদো শেখের ছেলেদের প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সামাজিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। পদ্মানদীতে মাছ ধরা, যেকোনো নির্বাচনসহ বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় দু'পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন পরবর্তী সময়ে গত ১২ জানুয়ারি সকালে বের কালোয়া মোড়ে দু'পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হয়। তার মধ্যে জিয়া গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় গত ১৩ জানুয়ারি ১৬জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন নিহতের ছোট ভাই ইয়ারুল হোসেন। এর আগে ২০২১ সালে একই স্থানে দু'পক্ষের সংঘর্ষে ১৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। সে সংক্রান্ত মামলা আদালতে চলমান রয়েছে।

মামলার বাদী ইয়ারুল বলেন, ঘটনা যেভাবেই ঘটুক আমি সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি আর কোনো সংঘর্ষ চাই না।

তিনি আরও বলেন, সংসদ সদস্য আজ আমার ভাইয়ের পরিবারকে দুই লাখ টাকা দিয়েছেন। আমি এলাকায় শান্তির জন্য সংসদ সদস্যের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে চাই।

এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক স্বপন বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জেরেই প্রতিপক্ষের আঘাতে জিয়ার নির্মম মৃত্যু হয়েছে। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

জিয়া হত্যার তীব্র নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করে কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ বলেন, অপরাধীরা যে দলেরই সমর্থক হোক, তাদের দেশের আইনে বিচার হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার যাতে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সেজন্য নগদ দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে আরও সাহায্য সহযোগিতা করা হবে। আর বের কালোয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন দু'পক্ষের বিরোধ চলছে। এলাকায় শান্তি ফিরাতে খুব অচিরেই উভয়পক্ষকে নিয়ে শান্তি সমাবেশ করা হবে।

কাঞ্চন/ফয়সাল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়