ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

বান্দরবানের ফুলঝাড়ুর কদর সারা দেশে 

বান্দরবান প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৬:৪৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বান্দরবানের ফুলঝাড়ুর কদর সারা দেশে 

পাহাড়ি বন-জঙ্গলে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা ফুলের তৈরি ঝাড়ুর কদর দিন দিন বাড়ছে। গৃহিণীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় ফুলঝাড়ু পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় ভাষায় ডাকা হয় উলুফুল নামে। আর সমতলে ফুলঝাড়ু হিসেবে পরিচিত। চাহিদা থাকায় বান্দরবানের ফুলঝাড়ু যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বান্দরবানে হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাহাড়ি নারী-পরুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে ফুলঝাড়ু বিক্রির উদ্দেশ্যে ভোর হতে অপেক্ষা করছেন। কেউ পাইকারি ক্রেতার সঙ্গে দর কষাকষি করছেন। পাইকারি ক্রেতারাও দরদাম ঠিক হলে কিনে নিচ্ছেন।

ফুলঝাড়ু ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে জুম চাষের জন্য পাহাড়ের ক্ষেতে আগুন দেয়ার আগে ফুল কেটে সংগ্রহ করে কাঁচা অবস্থায় আঁটি বানিয়ে বিক্রি করেন পাহাড়িরা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহ করে শুকানোর পর ঝাড়ু বানিয়ে হাট-বাজারে বিক্রি করেন। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান ব্যবসায়ীরা। বান্দরবান মধ্যমপাড়া হাট-বাজার ছাড়াও উপজেলার বাজারে ফুলঝাড়ু পাইকারি দরে বিক্রি করা হয়।

ফুলঝাড়ু বিক্রেতা মাম্যাউ মার্মা জানান, পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবেই ফুল জন্মে। অনেকে চাষও করেন। তিনি বিভিন্ন পাহাড় থেকে সংগ্রহ করে আঁটি বানিয়ে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। প্রতি আঁটি আকৃতিভেদে ১০-২০ টাকায় বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।

রোয়াংছড়ি তাঁরাছা এলাকা থেকে ফুলঝাড়ু বিক্রি করতে আসা অংক্যচিং মার্মা বলেন, পাহাড়ের জঙ্গলে জন্মানো ফুল সংগ্রহ করে আঁটি বানিয়ে পাইকারি বিক্রি করেন। পাইকারেরা বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে সংগ্রহ করে মজুদ করে রাখেন। পরে ট্রাক বা জিপ গাড়িযোগে বিভিন্ন জেলা শহরে নিয়ে যান।

একই এলাকার ফুলঝাড়ু বিক্রি করতে আসা নুংম্যাছাই মার্মা জানান, এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন পাহাড় হতে সংগ্রহ করে ৬০০ আঁটি ফুলঝাড়ু বিক্রি করে ৭ হাজার টাকা পেয়েছেন।

পাইকার ব্যবসায়ী মো. সেলিম ২ হাজার বান্ডেল ফুলঝাড়ু কিনেছেন। এক একটি বান্ডেলে ৫০টি আঁটি রয়েছে। এসব ফুলঝাড়ু ট্রাকে করে কক্সবাজারে নিয়ে যাবেন। এভাবে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে পার্বত্য জেলার স্থানীয় বাজার থেকে কাঁচা অবস্থায় ফুলঝাড়ু কিনে সংগ্রহে রাখেন। এরপর এগুলো শুকিয়ে বিভিন্ন জেলায় বিক্রি উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন তিনি।

চট্টগ্রাম হতে আসা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ১০ বছর ধরে বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকা থেকে ফুলঝাড়ু কিনে চট্টগ্রাম শহরে বিক্রি করে আসছেন। পাহাড়ের ফুলঝাড়ুর কদর সারা দেশে রয়েছে। তাই ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা বান্দরবান থেকে কিনে বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান।
 

চাইমং/বকুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়