‘আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি’

‘সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা ধৈর্য ধারণ করে মানবিক দিক থেকে এবং আন্তর্জাতিক একটি সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করছি।’

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

গতকাল রাত পর্যন্ত ১১৫ জন ও আজ সকালে আরও ১১৪ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী আত্মসমর্পণ করেছেন। দুপুরে আরও ৩৫ জন যোগ হয়ে মোট ২৬৪ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী আত্মসমর্পণ করেছেন। আমরা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি, খাবারের ব্যবস্থা করেছি। ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮ জন গুরুতর আহতের মধ্যে ৪ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এবং ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নবনিযুক্ত মহাপরিচালক বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে একজন রোহিঙ্গা ও একজন বাংলাদেশি নারী নিহত হয়েছেন। এসব মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। এমন পরিস্থিতি সমাধান করতে আমরা চেষ্টা করছি। নৌকাযোগে ৬৫ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করলে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুশব্যাকের চেষ্টা চলছে, কোনো অবস্থাতেই রোহিঙ্গাদের ঢুকতে দেওয়া হবে না।

বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, বিজিবি মহাপরিচালক হিসেবে জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পেরে আমি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মনে করছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই আমাদের সকল কাজের অনুপ্রেরণা। তিনি স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত এই বাহিনীকে পুনর্গঠন করে নবজীবন দান করেন।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিবিকে একটি বিশ্বমানের আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-২০১০’প্রণয়নসহ ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১’ এর পরিকল্পনা নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী বিজিবিকে একটি আধুনিক ত্রিমাত্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলেছেন। ফলে বিজিবি এখন জলে, স্থলে ও আকাশপথে অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে।

বিজিবি’র মতো ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী বাহিনীর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। দেশ মাতৃকার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবং দেশের মানুষের কল্যাণে সবাইকে সাথে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

এর আগে দুপুরে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ বেদিতে পুষ্পার্ঘ অপর্ণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানান মহাপরিচালক। পরে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।

বিজিবি মহাপরিচালকের শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিজিবি সদর দপ্তর’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, যশোর রিজিয়ন কমান্ডার, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি অপরাহ্নে তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র (বিজিবি) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার নেন।