ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

কেমন আছে গারো পাহাড়ের কােলের গজনি অবকাশ কেন্দ্র!

তারিকুল ইসলাম, শেরপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৩, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
কেমন আছে গারো পাহাড়ের কােলের গজনি অবকাশ কেন্দ্র!

শেরপুরের গজনী অবকাশ কেন্দ্র। দেশের উত্তরের গারো পাহাড়ের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে অবকাশ কেন্দ্র। 

প্রতি বছর এ সময়ে দর্শনার্থীরা শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের নৈসর্গিক দৃশ্য অবলোকন করতে আসেন। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকে প্রাণচাঞ্চল্য। ডিসেম্বরের শুরু থেকে সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকায় মানুষের ঢল নামে। আর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ভিড় জমায়। 

এবার অবকাশ কেন্দ্রটি পর্যটক শূন্য। ভরা মৌসুমেও চলছে পর্যটক না থাকায় লস গুনছেন ব্যবসায়ীরা। 

জাতীয় নির্বাচন ও শীতের তীব্রতা বেশি থাকাকে এর মূল কারণ  মনে করা হলেও সমস্য অন্য জায়গায়। স্থানীয়রা বলছেন, দূরের দর্শনার্থীদের আবাসিক সুবিধা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার জন্য টুরিস্ট পুলিশ না থাকায় আগ্রহ হারাচ্ছেন পর্যটক। 

মানিকগঞ্জ থেকে আসা ব্যংক কর্মকর্তা রহিম তালুকদার বলেন, এতো দূর থেকে এক দিনের ভ্রমণ কষ্টকর। থাকার মতো জায়গা না থাকায় ছেলে-মেয়ে রেখে শুধু স্বামী-স্ত্রী এসেছি। 

ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থেকে আসা স্কুল শিক্ষক হাকিম আহমেদ বলেন, প্রায় দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়ে এখানে এসেছি। যার অর্ধেকের বেশি মেয়ে। মেয়েদের সমস্যা হলে নিরাপত্তা কে দিবে ? নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর  দাবি তার।

ব্যবসায়ী ছানুয়ার হোসেন বলেন, এবার ব্যবসা একেবারে খারাপ। দিন দিন ব্যবসা খারাপ হচ্ছে। এখানো দর্শনার্থী বাড়ানোর জন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

এখানের বোট ক্লাবের ম্যানেজার এরশাদ হোসেন বলেন, ব্যবসা একেবারে লসের দিকে। এই ফেব্রুয়ারি মাসটাই আমাদের মূল সময়। এই মাসে ব্যবসা না হলে একেবারে লস হয়ে যাবে।

ফটোগ্রাফার এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি রিয়াজ খন্দকার বলেন, এখানে পঞ্চাশের অধিক ফটোগ্রাফার আছে। মানুষই নাই ব্যবসা কি দিয়ে হবে। কেন্দ্রটি জমজমাট করতে সরকারের কিছু করা দরকার।

শেরপুর জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খাইরুম বলেন, পর্যটকদের নিরাপদে ভ্রমণের জন্য টুরিস্ট পুলিশ স্টেশন স্থাপনে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ইতোমধ্যে মোটেল স্থাপনের জন্যেও প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তঘেঁষা ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নে ৯০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয় গজনী অবকাশ কেন্দ্রটি। ধাপে ধাপে পর্যটন কেন্দ্রটিতে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন লেক, ওয়াচ টাওয়ার, মিনি চিড়িয়াখানা, বাহারি গাছের পাহাড়ের মাঝ দিয়ে আঁকাবাঁকা সড়ক, ছোট-বড় মাঝারি টিলা, পাহাড়ের বুক জুড়ে তৈরি হয়েছে সুদীর্ঘ ওয়াকওয়ে ও কৃত্রিম জলপ্রপাতসহ নানা স্থাপনা। গত বছর এখানে যুক্ত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত ব্রিজ, ক্যাবল কার ও জিপ লাইনিং সহ বেশ কিছু স্থাপনা। 

/টিপু/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়