ঢাকা     রোববার   ০৭ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৩ ১৪৩১

রোগীর ছেলেকে নির্যাতন

রামেকে দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক বরখাস্ত, তদন্ত কমিটি

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
রামেকে দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক বরখাস্ত, তদন্ত কমিটি

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ছেলেকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় দুই ইন্টার্ন চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ঘটনার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক বরখাস্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহম্মদ। 

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক হলেন- ফরহাদ হাসান ও আলমগীর হোসেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহম্মদ বলেন, ‘গতকালই (বুধবার) তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আরও কিছু কাজ হবে। তারপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কক্ষে সুমন পারভেজ রিপন (৩০) নামে এক যুবককে দফায় দফায় বেধড়ক পেটান একদল ইন্টার্ন চিকিৎসক। রিপনের মা পিয়ারা বেগম (৬০) গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। রিপোর্ট দেখানোকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার জের ধরে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাকে পেটান। ভুক্তভোগী রিপনের বাড়ি রাজশাহী নগরীর বোসপাড়া মহল্লায়।

তাকে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। এতে রিপনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আর মাইরেন না স্যার। ম্যালা মাইর‌্যাছেন ভাই। আমাকে একটু পানি খেতে দেন। আমি মরে যাব। আমাকে মারার কথা আম্মাকে বইলেন না। আম্মা অসুস্থ হয়ে পড়বে।’ এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা রিপনকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। মাথা ন্যাড়া করে দিতে চান। এছাড়া ‘চিকিৎসকদের মারতে চাওয়ায়’ রিপনের হাত কেটে নিতে চান ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।

রিপনকে মারধরের ঘটনা নিয়ে হাসপাতাল পরিচালক বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সাংবাদিকদের একটি বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘হাসপাতালে মাকে ভর্তির পর থেকেই রিপন বিভিন্ন সময় চিকিৎসক ও নার্সদের বিরক্ত করছিলেন। গালিগালাজ ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বুধবার দুপুরে ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার রোগীর চিকিৎসা নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখন রিপন চিকিৎসকদের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেন এবং গালিগালাজ শুরু করেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং একজন ইন্টার্ন চিকিৎসককে আঘাত করেন। এতে ওয়ার্ডে সংঘর্ষের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’

যদিও রিপন কোন চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হাসপাতালে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন নগরীর রাজপাড়া থানায়। তবে পরে অভিযোগ না করেই তিনি চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক।

ওসি বলেন, ‘ছেলেটা এসে বলল যে সে অভিযোগ করবে। আমরা বললাম, অভিযোগ নেবো। সমস্যা নাই। পরে সে বলল, তার মাকে অন্য জায়গায় চিকিৎসা করাবে। হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হচ্ছে না। এটা শুনে আমি হাসপাতালে ফোন করলাম। হাসপাতাল আমাকে জানিয়েছে যে, তার মাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। পরে আমি একটা মিটিংয়ে যাই। এসে ছেলেটাকে আর পাইনি।’

কেয়া/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়