ঢাকা     শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৬ ১৪৩১

বড় বোন প্রেমে রাজি না হওয়ায় ছোট ভাইকে অপহরণ করে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০১, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ২৩:০১, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বড় বোন প্রেমে রাজি না হওয়ায় ছোট ভাইকে অপহরণ করে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

কক্সবাজার সদরে বড় বোন প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার পাঁচ বছর বয়সী ছোট ভাইকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম।

গ্রেপ্তার মো. তারেক আজিজ (২৬) কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মধ্যম জুমছড়ি এলাকার মোহাম্মদ আজিজের ছেলে। নিহত মোহাম্মদ আবিদ (৫) একই এলাকার মোহাম্মদ ইসহাকের ছেলে। গ্রেপ্তার আসামি নিহত শিশুর আপন চাচাতো ভাই।

মামলার নথির বরাত দিয়ে আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, মোহাম্মদ আবিদের এক বড় বোনকে তারেক আজিজ দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বড় বোনকে প্রেমে রাজি করাতে ছোট ভাই আবিদকে প্রায় সময় চকলেট ও আচারসহ অন্যান্য খাবারের লোভ দেখিয়ে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালায় তারেক আজিজ। এতে সে (তারেক) ব্যর্থ হয়ে আবিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

তিনি বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাড়ির পাশে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল মোহাম্মদ আবিদ। এ সময় আবিদকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে ইজিবাইকে করে পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকায় বাঁকখালী নদীর পাড়ে নিয়ে যায় তারেক আজিজ। সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে আবিদের সঙ্গে খেলাধুলা করে তারেক, যাতে আবিদকে হত্যা ঘটনায় কেউ তাকে সন্দেহ না করে। পরে নদীর পাড়ে গাছের সাথে আবিদকে বেঁধে রেখে তারেক আজিজ বাড়িতে চলে আসে।’

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, এদিকে সন্ধ্যার পরও আবিদ বাড়ি ফিরে না আসায় স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। সন্দেহ এড়াতে বাড়ি ফিরে তারেকও খোঁজাখুঁজি শুরু করে আবিদকে। আবিদকে না পেয়ে স্বজনরা বাড়ি ফিরে গেলে তারেক আবারও বাঁকখালী নদীর পাড়ে যায়। এর পর আবিদের হাতের বাঁধন খুলে জুমছড়ি এলাকার স্থানীয় একটি পুকুরে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। তার মরদেহ পানিতে ফেলে রেখে তারেক বাড়িতে ফিরে যায়।’ 

তিনি আরও বলেন, নিখোঁজ হওয়ার দিন রাতে অজ্ঞাত একটি মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল আসে আবিদের মায়ের ফোনে। তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণের টাকা না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকার একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় মোহাম্মদ আবিদের মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বুধবার বিকেলে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। র‍্যাব ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর হত্যার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। মধ্যরাতে আবিদ হত্যার হোতা পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকায় অবস্থান করছে, এ খবর পেয়ে র‌্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। র‌্যাব সদস্যরা সন্দেহজনক বাড়ি ঘেরাও করলে এক যুবক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। পরে ধাওয়া দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামি হত্যার হত্যাকাণ্ডের কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে বলে জানান আনোয়ার হোসেন শামীম। তিনি জানান, বিকেলে গ্রেপ্তার আসামিকে কক্সবাজার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

তারেকুর/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়