ঢাকা     শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১২ ১৪৩১

আনসার সদস্যকে ঘুষি মেরে হত্যায় মামলা, পলিটেকনিক ছাত্র গ্রেপ্তার

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০১, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
আনসার সদস্যকে ঘুষি মেরে হত্যায় মামলা, পলিটেকনিক ছাত্র গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে ঘুষি মেরে আনসার-ভিডিপি সদস্য মাইনুল ইসলাম (৪৫) হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। 

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিহত  মাইনুল ইসলামের স্ত্রী আলম আরা বেগম বাদী হয়ে ৩ জনের বিরুদ্ধে রাজশাহী রেলওয়ে থানায় এ মামলা করেন। 

এর আগে মাইনুলকে ঘুষি মারার অভিযোগে ঘটনার পরই আটককৃত রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রকে হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে আলম আরার দায়ের করা হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এই পলিটেকনিক ছাত্রের নাম তানভীর ইসলাম (১৭)। সে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার খেতাবেরপাড়া গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে এবং রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র। পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে। 

তবে এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ মল্লিক।

নিহত মাইনুল ইসলাম রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাঙ্গনপুর পালপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে মাইনুলকে ঘুষি মারা হয়।

ঘটনার সময় ছিলেন আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) দেলোয়ার হোসেন। তিনি জানান, রাতে স্টেশনের প্লাটফর্মে ডিউটির সময় তাদের ইনচার্জ হিসেবে ছিলেন রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু শাহাদত। পিসি দেলোয়ার হোসেন ও এসআই আবু শাহাদত স্টেশনের ৪ ও ৫ নম্বর প্লাটফর্মে ছিলেন। এখানে কয়েকজন তরুণকে অস্বাভাবিকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে এসআই শাহাদত তাদের চলে যেতে বলেন।

এ নিয়ে এসআইয়ের সঙ্গে তর্কে জড়ায় ওই তরুণেরা। একপর্যায়ে তারা গালাগালও শুরু করে। তখন এসআই শাহাদাত এই বখাটেদের ধরার জন্য আনসার সদস্যদের নির্দেশ দেন। এরপর ওই তরুণেরা ৩ ও ৪ নম্বর প্লাটফর্ম দিয়ে পালানোর সময় আনসার সদস্যরা তাদের ধরতে যান। এ সময়ে আনসার সদস্য মাইনুল ইসলামের বুকে ঘুষি মারে তানভীর ইসলাম। এতে মাইনুল ইসলাম পড়ে যান। আর অন্য আনসার সদস্যরা তানভীরকে ধরে ফেলেন। ঘটনার পর মাইনুলকে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত উঠতে শুরু করে। পরে হাসপাতালে তার ইসিজি করা হয়। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে রাজশাহী রেলওয়ে থানায় মামলা হয়। দুপুরের পর রামেকের মর্গে ময়নাতদন্তের পর নিহতের মরদেহ স্বজনদের দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পর রাতেই রাজশাহী রেলওয়ে থানায় যান রেলওয়ে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে তারা কোন কথা বলতে চাননি। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু শাহাদত বলেন, ‘আনসার সদস্যকে হত্যার অভিযোগে একজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অন্যদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’

নিহত মাইনুল ইসলামের ভগ্নিপতি মো. আলাল বলেন, ‘মাইনুল ইসলামের দুটি ছেলে পড়াশোনা করছে। উপার্জন করার আর কেউ নেই। তার সংসারটা ভেসে গেল। যেহেতু তিনি কর্তব্যরত অবস্থায় খুন হয়েছেন, তাই বাহিনী কিংবা সরকার তার পরিবারটির দিকে নজর দেবে, এটা আমরা চাই।’

কেয়া/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়