ঢাকা     শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৬ ১৪৩১

ধর্ষণের ভিডিও করে টাকা আদায় চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০২, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
ধর্ষণের ভিডিও করে টাকা আদায় চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে কৌশলে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ এবং ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। আলমগীর ওরফে রয়েল (৪০) নামের এক ব্যক্তি তার স্ত্রী ও দুই শ্যালিকাকে নিয়ে এই চক্রটি গড়ে তুলেছিলেন। আলমগীর কৌশলে নারীদের বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করতেন। ভিডিও করতেন তার স্ত্রী ও দুই শ্যালিকা। 

আলমগীরের স্ত্রী ও শ্যালিকারাও পুরুষদের ফাঁদে ফেলে বাসায় ডেকে অনৈতিক সম্পর্কে জড়াতেন। তখন এর ভিডিও করতেন আলমগীর। তারপর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করতেন। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার এক নারীর সঙ্গে এমন ঘটনার পর শুক্রবার রাতে আলমগীর, তার স্ত্রী হেলেনা খাতুন (৩০) এবং শ্যালিকা দিলারা বেগম (৩৫) ও মমতাজ বেগমকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। 

গ্রেপ্তারকৃত আলমগীর নগরীর হেতেমখাঁ এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকার ৩ নম্বর সড়কের এক বাসায় স্ত্রী-শ্যালিকাদের নিয়ে ভাড়া থাকতেন তিনি।

র‌্যাব বলছে, এই চক্রটি অনেক নারী-পুরুষের সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। চক্রটি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করত। তারা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে কিংবা চেকে স্বাক্ষরও নিয়ে রাখতেন। র‌্যাবের অভিযানে বাড়িটি থেকে কয়েকটি স্ট্যাম্প ও চেকবই জব্দ করা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, গত বৃহস্পতিবার এক নারী নগরীর কোর্টস্টেশনে গিয়ে তার মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলেন। এ সময় আলমগীর ফোন উদ্ধারের কথা বলে কৌশলে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। সেখানে নারীকে ধর্ষণ করা হয়। আর এ ঘটনার ভিডিও করেন তার স্ত্রী হেলেনা। পরে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিনটি ১০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন এবং পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যমানের জমি দাবি করেন এই চক্রের সদস্যরা। ভুক্তভোগী নারী ওই বাসা থেকে পালিয়ে এসে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানান এবং থানায় মামলা করেন। পরে র‌্যাব এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে।

র‌্যাব অধিনায়ক জানান, আলমগীরের কাজই হলো স্বামী পরিত্যাক্তা কিংবা বিধবা নারীদের টার্গেট করে ফাঁদে ফেলে বাসায় নেওয়া। এরপর ধর্ষণ করা এবং তার ভিডিও করে রাখা। এই ভিডিও করতেন তার স্ত্রী এবং দুই শ্যালিকা। আলমগীরের স্ত্রী-শ্যালিকারাও টার্গেট করা পুরুষদের ফাঁদে ফেলে বাসায় নিয়ে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। তখন ভিডিও করে রাখতেন আলমগীর। তারপর ভুক্তভোগীর কাছ থেকে একই কায়দায় টাকা আদায় করা হতো। লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীরা কেউ মুখ খুলতেন না। সবশেষ ভুক্তভোগী নারী এ বিষয়ে মামলা করেছেন। এ মামলায় আলমগীর ও তার স্ত্রী-শ্যালিকাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত ছিলেন কি না তা র‌্যাব তদন্ত করে দেখছে। অন্য কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান র‌্যাব অধিনায়ক।

কেয়া/মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়