ঢাকা     রোববার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৪ ১৪৩১

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে গভীর নলকূপ স্থাপনে অনিয়ম

ফরিদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৫, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে গভীর নলকূপ স্থাপনে অনিয়ম

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে গভীর নলকূপ স্থাপনার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে পাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। পরে গভীর রাতে কলেজটির শিক্ষার্থীদের বাধায় কাজ বন্ধ রাখলেও পুনরায় প্রতিষ্ঠানটি কাজ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে গভীর নলকূপ স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগে পেয়ে শিক্ষার্থীরা বাঁধা দেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. পাপ্পুকে। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় ওই ঠিকাদারের। এক পর্যায়ে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় ঠিকাদার।

অভিযুক্ত ঠিকাদার মো. পাপ্পু ফরিদপুর পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন বলে জানা গেছে।

কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মেসার্স পাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একটি গভীর নলকূপ নির্মাণের কার্যাদেশ দেন। কার্যাদেশ অনুযায়ী টিউবয়েলের বোরিং এর গভীরতা ১৪০০ ফিট হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদার ৯২০ ফিট গভীরতায় রাতের অন্ধকারে টিউবয়েল স্থাপন করতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। এ নিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এ সময় ঠিকাদার শিক্ষার্থীদেরকে স্থানীয় জেলা আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে হুমকি দেন।

এ ব্যাপারে কথা বলতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহামেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।

তবে অভিযোগের ব্যাপারে ঠিকাদার মো. পাপ্পু বলেন, আমার কার্যাদেশ অনুযায়ী টিউবয়েলের বোরিং এর গভীরতা ১৪০০ ফিট হওয়ার কথা থাকলেও ৯৯০ ফিটের কিছুটা বেশি যাওয়ার পর পাইপ ভেঙে যায়। তবে সেখান থেকেও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব। সেটা কর্তৃপক্ষ মেনেছেও। এখন শুধু ঝামেলা করছে আমার সঙ্গে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমার কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে পুনঃস্থাপনের কথা বলছে। কিন্তু পুনঃস্থাপনের টাকা কেউ দিতে চাচ্ছেন না। এটা করতে গেলে আমার লোকসান হবে।

জেলা আ'লীগ ও ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে হুমকিধামকি দেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে পাপ্পু বলেন, আমি তাদের এ পরিচয়ে কোনো হুমকিধামকি দেইনি। এটা মিথ্যা অভিযোগ।

এ ব্যাপারে কলেজটির অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, নিয়মানুসারে কাজ না হলে আমি বিলে স্বাক্ষর করবো না। আমি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বিষয়টি দেখতে বলেছি।

জেলা শিক্ষা ও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম বলেন, আমরা কাজটি আপতত বন্ধ রাখতে বলেছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে বলবো।

জেলা শিক্ষা ও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, ৯৯০ ফিট যাওয়ার পর পাইপ ছিঁড়ে গিয়েছে বলে শুনেছি। তবে সেখানে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব কি-না সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হবে। মোট তিন জায়গায় এ পানি পরীক্ষা করা হবে, তারপর সিদ্ধান্ত। আমরা আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছি। পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।

/তামিম/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়