ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

মুন্সীগঞ্জে ওষুধ ছিটিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না আলু গাছের পচন

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১২:৩৬, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
মুন্সীগঞ্জে ওষুধ ছিটিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না আলু গাছের পচন

মুন্সীগঞ্জের আলুর জমিগুলোতে ব্যাপক আকারে আলু গাছে পচন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ঘন ঘন ওষুধ ছিটিয়েও রোগবালাই হতে রক্ষা পাচ্ছে না আলু চাষিরা। ফলে কিছুতেই যেন পিছু হটছে না আলু চাষীদের দুর্ভোগ। 

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ সদর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বেশ কিছু আলুর জমি ঘুরে দেখা গেছে জমির আলু গাছগুলোর পাতায় ঠোসা পড়েছে। অনেক জমিতে আলু গাছের কান্ড পচে গেছে। দামি ওষুধ ব্যবহার করেও রোগবালাইয়ের হাত থেকে আলু গাছগুলোকে রক্ষা করতে পারছে না আলু চাষিরা।

মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় মোট ৩৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে।

টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আউটশাহী, বলই, বালিগাঁও, পাঁচগাঁও, মান্দ্রা, মুটুকপুর, ধীপুর, সদর উপজেলার বজ্রযোগীনি মামাসার, আটপাড়া, মহাকালী এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে বিস্তীর্ণ আলু জমির গাছগুলোর পাতায় ঠোসা পড়ে রয়েছে; অনেক জমির আলু গাছের কান্ড পচে গাছগুলো মাটিতে মিশে গেছে। ওষুধ কোম্পানির লোকজনের শিখানো অনুযায়ী তারা জমিতে ওষুধ ছিটাচ্ছেন। তারপরেও ছড়িয়ে পড়েছে রোগ-বালাই। সাধারণত দামি ওষুধের ব্যান্ডগুলোতে ১২/১৫দিন পর পর ওষুধ ছিটানোর কথা বলা থাকলেও কৃষকরা প্রতি সপ্তাহে ওষুধ ছিটাচ্ছেন। ওষুধ ছিটানো ছাড়াও জমি পরিষ্কার এবং জমিতে সেচ দেওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

সদর উপজেলার বজ্রযোগীনি গ্রামের কৃষক মো. মনির হোসেন বলেন, জমিতে ওষুধ দিয়েই চলছি। কিন্তু রোগ-বালাইতো কিছুতেই থামছে না। বাজারের সবচেয়ে দামি ওষুধ ২৫০ গ্রাম ৯০০ টাকায় কিনে জমিতে দিলাম তারপরেও রোগ-বালাই বেড়েই চলছে।

বলই গ্রামের কৃষক মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি সপ্তাহেই ওষুধ ছিটাচ্ছি। তারপরেও আলু গাছে রোগ বেড়েই চলছে। ওষুধ কোম্পানির লোকজন জমিতে এসে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ওষুধ ছিটানোর পরামর্শ দিচ্ছে। আমরা তাদের শিখানো পদ্ধতিতে ওষুধ ছিটাচ্ছি; কিন্তু তারপরেও রোগ- বালাই বেড়েই চলছে।

এর আগে এ বছর আলু চাষ করতে গিয়ে মুন্সীগঞ্জের কৃষক দু’দফা বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একদিকে আলু বীজ পচে নষ্ট হয়; অন্যদিকে বৃষ্টিপাতের কারণে আলু চাষ এক মাসের অধিক সময় বিলম্বিত হয়। আলু চাষের জন্য নভেম্বর মাস উত্তম সময় হলেও এ বছর জানুয়ারি মাসের অর্ধেক সময় পর্যন্ত জমিতে আলু চাষ করতে দেখা গেছে কৃষকদের।

মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ৩৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে মুন্সীগঞ্জে আলু আবাদ হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩৪ হাজার ৩৪৬ হেক্টর। যখন মুন্সীগঞ্জে আবহাওয়া খারাপ ছিলো, ঘন কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া ছিলো তখন আমাদের আলু গাছের বৃদ্ধি তেমন না থাকায় রোগ-বালাই কিন্তু গাছগুলোকে আক্রান্ত করতে পারে নাই। এখন আবহাওয়া ভালো কিন্তু তারপরেও যদি রোগবালাই বা পচন রোগে আলু গাছ আক্রান্ত হয় তাহলে একরোভেড, এমজেড অথবা সিকিউর জাতীয় ওষুধগুলো সপ্তাহে একবার ভালোভাবে পুরো আলু গাছ ভিজিয়ে ছিটাতে হবে। আর যদি গাছ পচন রোগে আক্রান্ত না হয় তবে ডায়থেন এম-৪৫, একরোভেট এম-৪৫ জাতীয় ওষুধগুলো ছিটাতে হবে।

রতন/ফয়সাল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়