ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

লাভলুর টানে নদী সাঁতরে বাংলাদেশে, সুখেই সংসার করছেন সঞ্জনা 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ২২:৩৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
লাভলুর টানে নদী সাঁতরে বাংলাদেশে, সুখেই সংসার করছেন সঞ্জনা 

স্বামী লাভলুর সঙ্গে সঞ্জনা

ভারতের নদীয়া জেলার চরমেঘনা এলাকার বাসিন্দা সঞ্জনা (২৩)। পদ্মার শাখা (মাথাভাঙা) নদীতে গোসল করতে গিয়ে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার জামালপুর সীমান্ত এলাকার যুবক লাভলু হোসেনের (২৫) সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর দুই জনের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। তিন মাসের প্রেম নানা বাধা পেরিয়ে শুভ পরিণয়ে রূপ নেয়। দুই সন্তান নিয়ে এখন তাদের সুখের সংসার।

এলাকাবাসী ও লাভলুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হিন্দু পরিবারের মেয়ে সঞ্জনার বাবা প্রথমে দুই জনের সম্পর্ক কোনোভাবেই মেনে নিতে রাজি হননি। একপর্যায়ে ভালোবাসার টানে সঞ্জনা নদী সাঁতরে এই দেশে চলে আসেন।  ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর লাভলুকে বিয়ে করেন তিনি।

লাভলু বলেন, ‘সঞ্জনার নাম রাখা হয়েছে ফাতেমা খাতুন। আমাদের বিয়ে হলেও সঞ্জনার পরিবার প্রথমে তা মেনে নেয়নি। পরে মেনে নিলেও পাসপোর্ট না থাকায় সঞ্জনা তার বাবার বাড়ি যেতে পারে না। তার নাগরিকত্বের জটিলতা প্রায় কেটে গেছে। আশা করি, কিছুদিনের মধ্যেই তার পাসপোর্ট করা সম্ভব হবে।’

সঞ্জনা বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে নদীর ঘাটে গোসল করতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আমাদের। তখন দশম শ্রেণিতে পড়তাম আমি। একদিন স্কুল ফাঁকি দিয়ে বন্যার সময় ভরা নদী সাঁতরে চলে আসি লাভলুর বাড়িতে। পরে আইনি সব জটিলতা সামলে বিয়ে হয় আমাদের। সংসারে জন্ম নেওয়া ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমরা অনেক সুখে আছি।’

শ্বশুর-শাশুড়ি ও সন্তানের সঙ্গে সঞ্জনা

লাভলুর বাবা ইদ্রিস আলি বলেন, ‘সব বাধা পেরিয়ে ছেলের ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমি সঞ্জনাকে নিজের মেয়ের মতো করেই দেখি। ভালোভাবে তারা সংসার করছে। তারা ভালো আছে।’

প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল বলেন, ‘শুরুতে আইনি জটিলতা ছিল। পরে তা ঠিক হয়েছে। তারা এখন সুখে সংসার করছে। আমরাও সামাজিকভাবে তাদের মর্যাদা দিয়েছি। তাদের যে কোনো সমস্যায় আমরা সব সময় পাশে আছি।’

জানতে চাইলে দৌলতপুর কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সরকার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেম এমন এক জিনিস যা পরিবার, ধর্ম, কাঁটাতারের বেড়া মানে না। তাদের (লাভলু-সঞ্জনা) ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। শত বাধা উপেক্ষা করে তাদের প্রেম পরিণয়ে রূপ নিয়েছে।’

কাঞ্চন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়