ঢাকা     শনিবার   ২৯ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৫ ১৪৩১

ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে: ডেপুটি স্পিকার

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে: ডেপুটি স্পিকার

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তিনি নিজে দুইবার ফাঁসির মুখোমুখি হয়েও নিজেদের অধিকার আদায়ে শাসক গোষ্ঠীর কাছে নত স্বীকার করেননি। আর তাই ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের স্বাধীনতা সোপান চত্বরে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আবৃত্তি সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এসব কথা বলেন।

ডেপুটি স্পিকার আরও বলেন, এই ভাষার মাসেই আগরতলা মামলায় শাসক গোষ্ঠীর প্রহসনের বিচারের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলো; তখন ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থান ঘটে। ১৫ ফেব্রুয়ারিতে কুর্মিটোলা ক‌্যান্টনমেন্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ‌্যে গুলি করা হলে সেই গুলি সার্জেন্ট জহুরুল হকের বুকে লাগলে তিনি নিহত হন। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ছাত্র-জনতা রাস্তায় বেড়িয়ে আসে এবং ‘সার্জেন্ট জহুরুল হক হত‌্যার বদলা নেবো, শেখ মুজিবকে মুক্ত করবো’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়।

শামসুল হক টুকু বলেন, শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের রক্তের ধারাবাহিকতায় বাংলার ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ফুঁসে উঠেছিল। এই হত্যার বিচার ও শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিলাম। সেখানে গুলি ও লাঠিচার্জে আহত ছাত্রের গায়ের রক্ত ড. শামসুজ্জোহার শার্টে লাগে। তিনি সেদিন একটি সভায় শার্ট খুলে দেখিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, আর যদি আমার ছাত্রের গায়ে গুলি করা হয় তাহলে সে গুলি আমার ছাত্রের গায়ে না লেগে আমার গায়ে লাগবে।

তিনি আরও যোগ করেন, আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শাসক গোষ্ঠীর আধা সামরিক বাহিনীর উপর্যপুরি গুলি ও বেয়নেটের আঘাতে ড. শামসুজ্জোহা শহীদ হন। ড. জোহার রক্তের ফলে জনতার রোষানলে পরে ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখেই পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী আগরতলা মামলার সকল আসামিকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২২ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বাধ‌্য হয় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলপনা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শাহ আযম, সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আলী খানসহ গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেড়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেন, বঙ্গবন্ধু এই ফেব্রুয়ারি মাসেই ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগ্রত করার মধ্য দিয়ে মাতৃভাষা রক্ষার যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তা পূর্ণতা পায়। জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়া, ৭ই মার্চের ভাষণ দান, স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান, নিজেদের মানচিত্র ও লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত ভাষা ও স্বাধীন দেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, কর্মকর্তাবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

শাহীন/ফয়সাল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়