ঢাকা     শনিবার   ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৮ ১৪৩১

ভাষা শহিদ আব্দুল জব্বার স্মৃতি জাদুঘর: সারা বছর নীরব, ফেব্রুয়ারিতে সরব

মাহমুদুল হাসান মিলন, ময়মনসিংহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৩:৫৬, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ভাষা শহিদ আব্দুল জব্বার স্মৃতি জাদুঘর: সারা বছর নীরব, ফেব্রুয়ারিতে সরব

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই মিছিলে সালাম, বরকত, রফিকদের সঙ্গে যাদের বুকের তাজা রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল তাদের একজন শহিদ জব্বার। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের পাঁচুয়া গ্রামে।

জব্বারের এই আত্মত্যাগের স্মৃতি রক্ষায় ২০০৮ সালে পাঁচুয়া গ্রামে ভাষা শহিদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করে সরকার। তবে, শহিদের ছবি ছাড়া কোনো স্মৃতিচিহ্ন জাদুঘরে না থাকলেও জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় স্থাপিত গণগ্রন্থাগারে ৪ হাজারের অধিক বই রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সারা বছর অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকে জাদুঘরটি। ছুটির দিন বাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই গ্রন্থাগার ও জাদুঘর। তবে, মাঝে মধ্যে কিছু দর্শনার্থী উঁকি দিলেও বেশির ভাগ সময় ফাঁকা পড়ে থাকে। আগে দৈনিক পত্রিকা রাখা হলেও এখন তাও রাখা হয় না। গ্রন্থাগার দেখাশুনা ও পরিচালনার জন্য লাইব্রেরিয়ান, সহকারী লাইব্রেরিয়ান ও পিয়নসহ মোট ৫টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন একজন সহকারী লাইব্রেরিয়ান ও একজন কেয়ারটেকার। 

বছরজুড়ে নীরব থাকলেও ভাষার মাসে মিলন মেলায় পরিণত হয় শহিদ জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে উপলক্ষে এখানে উদযাপিত হয় তিন দিনব্যাপী অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা। তখন স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজারো মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়।

ভাষা শহিদ আব্দুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি যাদুঘরের দায়িত্বে থাকা সহকারী লাইব্রেরিয়ান কায়সারুজ্জামান বলেন, অনেক মূল্যবান বইয়ের সমাহার রয়েছে এখানে। নিয়মিত গ্রন্থাগার খোলা রাখা হলেও প্রায়ই দর্শনার্থী শূন্য থাকে। তবে, ফেব্রুয়ারি মাসে বেশ দর্শনার্থী আসে। তবে, তাদের মধ্যে বই পড়ার পাঠক তেমন থাকে না। অনেকেই জাদুঘরের সামনে, শহিদ মিনার কিংবা ভাষা শহিদ জব্বারের ম্যুরালের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার পর ফিরে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাষা শহিদ জব্বারের ব্যবহৃত কোনো জিনিসপত্র জাদুঘরে নেই। উপজেলা সদর থেকে সরাসরি যানবাহন না থাকায় আসা-যাওয়ায় পরিবহন সঙ্কটে পড়তে হয়। তাই এখানে তেমন কেউ আসে না।

তারা মনে করেন, ফেব্রুয়ারি মাস ছাড়াও শহিদ জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরকে আরও জাঁকজমক করা যায়। সেজন্য এখানে একটি শিশু পার্ক স্থাপন করা যেতে পারে।

রাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাবুল আলম বলেন, গ্রাম্য পরিবেশ বিধায় সারা বছরই গ্রন্থাগারটি প্রাণহীন থাকে। নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা শহিদের ইতিহাস তুলে ধরতে এলাকাটিকে দৃষ্টিনন্দন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য উদ্যোগ নিয়েছেন।

গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে যোগদান করে ভাষা শহিদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেছি। বইয়ের সংখ্যা ও মানের দিক থেকে বেশ সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থাগার। দর্শনার্থী ও পাঠকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

কেআই


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়