ঢাকা     সোমবার   ০৮ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৪ ১৪৩১

৮ মাস ধরে পলিথিনে মোড়ানো অ্যাম্বুলেন্স, ভোগান্তি

অদিত্য রাসেল, সিরাজগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১০:৪৬, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
৮ মাস ধরে পলিথিনে মোড়ানো অ্যাম্বুলেন্স, ভোগান্তি

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি অ্যাম্বুলেন্স। এর মধ্যে, একটি প্রায় আট মাস ধরে অকেজো হয়ে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় রয়েছে। অন্যটি দিয়ে কোনো রকম সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেটাও মাসে কয়েকবার নষ্ট থাকে। এ অবস্থায় মুমূর্ষু রোগীদের জেলা শহর বা ঢাকায় পাঠাতে ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্সের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন বিল্ডিংয়ের পাশে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে আছে। অ্যাম্বুলেন্সের চারটি চাকার মধ্যে দুটি নেই। দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের সামনের অংশ পুরোটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় এটিকে পলিথিনে জড়িয়ে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের জুনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এক রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যায় অ্যাম্বুলন্সেটি। ফেরার পথে দুর্ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে অ্যাম্বুলেন্সটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঠ প্রাঙ্গণে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো মুমূর্ষু রোগীকে সদর হাসপাতাল অথবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেটাও মাসে কয়েকবার বিকল হয়ে পড়ে থাকে। তখন রোগীদের ভাড়া করা অ্যাম্বুলেন্সের ওপর নির্ভর করতে হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েন দরিদ্র রোগীদের স্বজনেরা। কারণ, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া অনেক বেশি হয়। তখন তারা রোগীদের অটোরিকশায় অন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে দুটো অ্যাম্বুলেন্স সচল থাকলে সবসময় সেবা দেওয়া যেত।

রোগীর স্বজনেরা বলেন, বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এর মধ্যে নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। তাই পুরনোটি দিয়ে রোগী পরিবহন করা হচ্ছে। তবে সেটির সার্ভিস ভালো নয়। বেশিরভাগ সময় অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট থাকে। তাই অনেক সময় বাইরে থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে হয়। এতে খরচ বেশি হয়। দ্রুত এই হাসপাতালে একটি নতুন অ্যাম্বুলেন্স দরকার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতাল এলাকার কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, রোগীর অবস্থা খারাপ দেখলে তাকে জেলা শহরের হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বলা হয়। তবে সহজে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় না। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা ভাড়া লাগে। এতে দরিদ্র রোগীরা বিপদে পড়ে যান।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক আবদুল লতিফ বলেন, দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে।  সেটি মেরামত করা হলে চালানো যেত। বর্তমানে যে অ্যাম্বুলেন্সটি রয়েছে। অনেক সময় সেটার ইঞ্জিনের কাজ করতে হয়। তখন হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ থাকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একেএম মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্য নতুনটি দুর্ঘটনায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বর্তমানে পুরাতন অ্যাম্বুলেন্সটি দিয়ে রোগী পরিবহন করা হচ্ছে। তবে, সেটির সার্ভিস সন্তোষজনক নয়। আমরা একটি নতুন অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।

সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন রামপদ রায় বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত করতে অনেক টাকা লাগবে। মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়েছি, না হলে নতুন একটা অ্যাম্বুলেন্সের জন্যও আবেদন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবশ্যই একটা ব্যবস্থা করবেন আশা করছি।

কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়