না.গঞ্জে হকার বসতে না দিলে মঙ্গলবার থেকে কর্মসূচি
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
নিয়মতান্ত্রিকভাবে ফুটপাতে বসে ব্যবসা করার অনুমতি দেয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জের হকার নেতারা আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, ‘আগামী সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। এর আগে যদি আলোচনা করে আমাদের দাবি মেনে নেয়া হয়, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি সোমবারের মধ্যে তা মেনে না নেয়, তাহলে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে আমাদের লাগাতার কর্মসূচি শুরু হবে। আমাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতারাও থাকবে। সকল হকার তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় নামব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।’
তারা বলেন, ‘সারা দেশে ফুটপাতে হকার আছে, তাহলে নারায়ণগঞ্জে ফুটপাতে কী সমস্যা? নারায়ণগঞ্জে সবকিছু ঠিক চলছে। খালি সমস্যা হকারদের। আমরা কি মানুষ না? আমাদের জন্য কি আপনাদের মায়া হয় না। সামনে রমজান মাস। পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু বাঁচতে চাই। দয়া করে রমজানকে সামনে রেখে বিকাল ৫টা থেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ফুটপাতে দোকানদারি করতে দিন।’
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাষাড়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদে ও পুনর্বাসনের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা হকার্স সংগ্ৰাম পরিষদের অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে হকার নেতারা এ হুঁশিয়ারি দিয়ে বক্তব্যে রাখেন।
হকার নেতারা বলেন, ‘সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, শামীম ওসমান এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রতি আমাদের আকুল আবেদন। দয়া করে আমাদের পরিবার ও পরিজন নিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে দেন। আপনারা নারায়ণগঞ্জের মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বন্ধ করুন। তাদের বন্ধ করতে পারেন না, পারেন শুধু হকার উচ্ছেদ করতে।’
হকাররা নেতারা বলেন, ‘এ সরকার গবিরবান্ধব সরকার। কাউকে উচ্ছেদ করতে হলে আগে পুনর্বাসন করতে হয়। পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ করা চলবে না। কিন্তু আমাদের নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধিরা পুনর্বাসন ছাড়াই আমাদের হঠাৎ করে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। এটা কোনো মানবতা হতে পারে না।’
তাঁরা বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে হকার উচ্ছেদ হলেও কোনো দোকান মালিক সমিতি রাস্তায় নামে না। কিন্তু আমাদের উচ্ছেদ পর নারায়ণগঞ্জ দোকান মালিক সমিতি আমাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছে। আমরা জানি, আপনারা কাদের ইশারায় রাজপথে নেমেছেন। কারণ আপনারা মার্কেটে ১৫০ টাকার জিনিসপত্র ৩০০ টাকা বিক্রি করেন। আপনারা মানুষের পকেট কাটার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছেন। নারায়ণগঞ্জের ৯০ শতাংশ মানুষ মার্কেট থেকে জিনিসপত্র কেনে না। তারা সবাই ফুটপাত থেকে জিনিসপত্র কিনে থাকেন। কারণ তারা হকারদের ভালোবাসেন।’
তাঁরা আরও বলেন, হকারদের কারণে নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট হয় না। যানজট হয় অটোরিকশা ও অবৈধ স্ট্যান্ডের কারণে। এখনও শহরে অবাধে চলছে অটোরিকশা। অবৈধ স্ট্যান্ডের এখনও বহাল রয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা হকার্স সংগ্ৰাম পরিষদের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্যে রাখেন, শ্রমিকনেতা হাফিজুল ইসলাম, আবদুল হাই শরীফ, ইকবাল হোসেন, এম এ শাহিন, মহানগর হকার্স লীগের সভাপতি রহিম মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক মো. পলাশ, হকার নেতা মো. রানা, মো. শাহিন, নিলুফা বেগম প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচি শেষে চাষাড়া শহীদ মিনার হকাররা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের চাষাড়া থেকে শুরু করে দুই রেলগেট হয়ে আবারও শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।
অনিক/বকুল