ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

গোয়াল ঘরেই সন্তানসহ থাকেন বাচ্চাই-কমরউদ্দিন দম্পতি

লালমনিরহাট সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৯:১৯, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গোয়াল ঘরেই সন্তানসহ থাকেন বাচ্চাই-কমরউদ্দিন দম্পতি

ষাটোর্ধ্ব বাচ্চাই বেগম-কমরউদ্দিন। সতী নদীর পাড়ে বাঁশের বেড়া আর টিন দিয়ে তৈরি করা একটি ঝুপড়ি ঘরেই দুই সন্তানকে নিয়ে গরুর সঙ্গে বসবাস করছেন তারা। ঘরে আসবাবপত্র বলতে বাঁশের চৌকি, রান্নার দু-একটা বাসন ছাড়া আর কিছুই নেই। এই দম্পতি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের বারাজান এলাকার বাসিন্দা।

সম্প্রতি বারাজান এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দরিদ্রতার কারণে জরাজীর্ণ ঘরে অসুস্থ স্বামী-সন্তানদের নিয়ে গরুর সঙ্গে বসবাস করছেন ভূমিহীন এই দম্পতি। নিজের থাকার ঘরের একদিকে বিছানা অন্যদিকে খড় বিছানো গরুর থাকার জায়গা। স্থানীয়রা জানান, কাজ না জুটলে তিন বেলা খাবার জোটেনা এই পরিবারের।

কান্না জড়িত কণ্ঠে বাচ্চাই বেগম বলেন, ‘অভাবের কারণে গরুর সঙ্গে একই ঘরে থাকতে হয়। রান্না থেকে শুরু করে সব কিছুই করতে হয় ওই ঘরটিতে। আমার স্বামী অসুস্থ। তিনি কাজ করতে পারেন না। আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করি, ছেলেটা অন্যের কাজ করে। মা-ছেলেতে যা আয় হয় তা দিয়েই সংসার চলে। অনেকে সরকারি ঘর পাইলেও আমাদের ভাগ্যে জোটেনি ঘর।’

কমরউদ্দিন বলেন, ‘খাস জমিতে কোনো রকম একটা টিনের ঘর করে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে থাকি। পাশে গরুটা থাকে। ওই ঘরেই থাকা খাওয়া সব। দুর্গন্ধে থাকা যায় না। এই অবস্থায় বাড়িতে কোনো আত্মীয় আসতে পারে না। সহায় সম্বল কিছুই নেই আমার। শুধু ওই গরুটাই আছে। সরকার একটা ঘর দিলে বাকি জীবনটা কিছুটা হলেও সুখে থাকতে পারতাম।’

চলবলা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ বলেন, এই দম্পতি ভূমিহীন। তাদের চার মেয়ে এক ছেলে। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তারা। আর ১৬ বছরের এক ছেলে ও ১২ বছরের এক মেয়েসহ ঝুপড়ি ঘরে থাকেন বাচ্চাই-কমরউদ্দিনের পরিবার। সরকারি বিধি মোতাবেক তারা সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছি। আমরা পরিবারটির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করব।

জামাল/মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়