ঢাকা     মঙ্গলবার   ১২ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২৮ ১৪৩১

শিমুল ফুলে রঙিন প্রকৃতি

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৭, ২ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৪:১৭, ২ মার্চ ২০২৪
শিমুল ফুলে রঙিন প্রকৃতি

এখন ফাগুন। বসন্তের আবহে গাছে গাছে পরিপক্ব শিমুল ফুল। গাছতলায়ও বিছানো অজস্র ফুল। কাকডাকা ভোরে গাছে থোকায় থোকায় ফুল আর রাস্তায় ঝরে পড়া ফুলগুলো দেখে মনে অন্য রকম এক অনুভূতি জাগে। 

মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে গাঁয়ের মেঠো পথের ধারে অযত্নে-অবহেলায় শিমুল পলাশের কোলজুড়ে হেসে ওঠে রক্তিম বর্ণের ফুল।  বিভিন্ন এলাকায় গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল। প্রকৃতিকে যেন সাজিয়েছে শিমুল ফুলের শোভা। বসন্ত বাতাসে দোল খাচ্ছে শিমুল ফুলের রক্তিম আভা।

শিমুলগাছে বসন্তের শুরুতেই ফুল ফোটে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পাকে। পরে শুকিয়ে যাওয়া ফল ফেটে বাতাসে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

পরিবেশ ও প্রকৃতিবিষয়ক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বারসিকের মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সমন্বয় বিমল রায় বলেন, ‘প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে উঠছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি বালিশ, লেপ ও তোষক তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। অর্থনৈতিকভাবেও বেশ গুরুত্ব বহন করছে শিমুল।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মাসুদ জামিল জিলানী বলেন,  ‘বসন্ত রাঙানো এই গাছগুলো এখন অনেক কমে গেছে। আগে গ্রামগঞ্জের সবখানে এই ফুলের দেখা মিলত। এখন এ গাছের দেখা পাওয়াই দুষ্কর।’ 

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এটি ফলদ বৃক্ষ নয়, শুধু ফুলের সৌন্দর্য। এ ছাড়া এই গাছের কাঠ জ্বালানি ছাড়া কোনো কাজে আসে না। ফলে এ গাছ লাগাতে মানুষের এত অনীহা।’

বানিয়াজুড়ি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মেঠো পথের ধারে বেশ কয়েকটি শিমুল গাছে লাল ফুল শোভা পাচ্ছে। মেঠো পথ ধরে একটু এগোলেই প্রকাণ্ড এক পুরনো পুকুর। পাশাপাশি কয়েকটি শিমুল আর পলাশ গাছ। দেখে মনে হবে বসন্তের স্মারক এই পলাশ শিমুল ফুল ফোটানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। প্রকৃতি যেন নিজ রূপে সেজে উঠেছে। শিশুরা গাছতলায় সেই ফুল নিয়ে খেলা করছে। 

কেল্লাই, নালী, বাঠইমুড়ি, পয়লা, সিংজুরী, জাবরা, আশাপুর, পেঁচারকান্দা, বড়টিয়া, শোলধারা, পুখুরিয়া, গোলাপ নগর এলাকার রাস্তার দুপাশে, পুকুরপাড়ে বসন্ত বাতাসে দোল খাওয়া শিমুল গাছে ফুলের দৃশ্য চোখে পড়ে। পথচারীসহ দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে শিমুল ফুল। প্রিয়জনদের নিয়ে ফোনে ছবি তুলে মুহূর্তেই তা অনেকে প্রকাশ করছেন ফেসবুকে।

গড়পাড়া এলাকা থেকে ঘুরতে আসা চয়ন শেখ বলেন, ‘শিমুল ফুলের সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধ করবে যে কাউকে। তাই বানিয়াজুরীর রাথুরা গ্রামের অটল সাহার বাড়ির পুকুর পাড়ে শিমুল-পলাশের জোড় বন্ধন দেখতে আসলাম। পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে।’

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মো.এনায়েত উল্লাহ বলেন, প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন হচ্ছে শিমুল গাছ। এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ। শিমুলের ইংরেজি নাম সিল্ক কটন ট্রি। বসন্তের স্মারক শিমুল গাছ রোপণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

/টিপু/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়