ঢাকা     শনিবার   ২৯ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৫ ১৪৩১

স্বামীর দাফন শেষে কেন্দ্রে তিথি, কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া হলো না

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১২, ৪ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ২১:৩০, ৪ মার্চ ২০২৪
স্বামীর দাফন শেষে কেন্দ্রে তিথি, কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া হলো না

তিথি খাতুন

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় জোবেদা সোহরাব মডেল একাডেমী থেকে চলতি এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিথি খাতুন। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত স্বামীর দাফন শেষে নির্ধারিত সময়ের পরে উপস্থিত হওয়ায় তিনি পরীক্ষা দিতে পারেননি। 

রোববার (৩ মার্চ) সকালে এ ঘটনা ঘটেছে শ্যামনগর পৌর সদরের নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে। কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষাবোর্ড নিয়ন্ত্রকের অনুমতি না মেলায় ওই পরীক্ষার্থীর জন্য তাদের কিছু করার ছিল না। 

শ্যামনগর পৌরসভার মাজাট গ্রামের আরশাদ আালী বাবুর মেয়ে তিথি বাড়ির পাশের জোবেদা সোহরাব একাডেমীতে লেখাপড়া করেন।

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী তিথি খাতুন জানান, আট মাস আগে খানবাহাদুর আহসানউল্লাহ কলেজের সম্মান শ্রেণির ছাত্র দেবহাটা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। আগের পরীক্ষাগুলো ভালো হয়েছে— উল্লেখ করে তিনি জানান, শনিবার রাতে এক বন্ধুকে রক্ত দিতে বের হয়ে কুলিয়া এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তার স্বামী বিল্লাল হোসেনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে রাতেই শ্বশুর বাড়িতে যান। রোববার সকাল ১০টায় তার স্বামীর জানাজার সিদ্ধান্ত হয়। জানাজা ও দাফন শেষে শ্বশুর বাড়ি থেকে দ্রুত শ্যামনগরের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছালেও তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি।

তিথির প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘মেয়েটি মেধাবী বলে আমি নিজেও অনুরোধ করেছিলাম, তাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বসিয়ে নুতনভাবে ওএমআর (অবজেকটিভ) প্রশ্ন সরবরাহসহ অন্যান্য প্রশ্নপত্র দিয়ে সময় কমিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য। কিন্তু সেই সুযোগ দেয়া হয়নি। এতে করে সদ্য স্বামী হারানো মেয়েটির জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ল।’

কেন্দ্র সচিব নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুষ্ণেন্দু মুখার্জী বলেন, ‘মেয়েটির এমন দুর্ঘটনার কথা জেনে সরাসরি কন্ট্রোলর স্যারকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু আগেই ওএমআর (অবজেকটিভ) পরীক্ষা শেষ হওয়ায় তাকে নুতন করে সেগুলো সরবরাহ সম্ভব ছিল না।’

তিনি আরও জানান, এছাড়া মাত্র এক ঘণ্টার একটু বেশি সময় বাকি থাকতে তিথি কেন্দ্রে পৌঁছানোর কারণে তার পক্ষে ওই সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ করাও সম্ভব ছিল না।
 

শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়