দিনে-রাতে সমানে কামড়ায় মশা, অতিষ্ঠ নগরবাসী
রেজাউল করিম, গাজীপুর || রাইজিংবিডি.কম
মশা থেকে বাঁচতে দিনের বেলায় মশারি টাঙিয়ে থাকতে হচ্ছে
গাজীপুর মহানগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। সিটি করপোরেশন থেকেও মশা নিধনে নেওয়া হচ্ছে না তেমন কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ। ফলে, দরজা-জানালা লাগিয়ে, কয়েল জ্বালিয়ে কিংবা মশারি টাঙিয়েও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না মশার কামড় থেকে। দিনের বেলাতেও টাঙানো লাগছে মশারি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নেই পর্যাপ্ত নালা, নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার স্থান। যে যেখানে পারছেন সেখানেই বাড়ি ও ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের ময়লা ফেলছেন। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এসব স্থানে জমে থাকা পানি থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা। গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বেসরকারি ক্লিনিক থেকে শুরু করে কোথাও মশা থেকে নিস্তার মিলছে না। অনেকেই দিনের বেলাতেও ঘরে মশারি টাঙিয়ে রাখছেন।
উত্তর ছায়াবীথি এলাকার বাসিন্দা তাসফিক আহমেদ বলেন, এলাকার ড্রেনগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন কি পরিমাণ মশা সেখানে রয়েছে। রাতের পাশাপাশি দিনের বেলাতেও মশার উৎপাত রয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলরদের জানালেও মশার ওষুধ ছিটাতে দেখা যায়নি তাদের। নগরীতে বসবাস করলেও সারা বছর নানা দুর্ভোগ আমাদের নিত্যসঙ্গী।
নগরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বেশিরভাগ এলাকায় রয়েছে পঁচা আর্বজনায় ভরপুর ও ছোট-বড় নালা। এইসব নালায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির নোংরা পানি জমা থাকে। সিটি করপোরেশনের যেসব এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলো অনেক দিন সংস্কার না করায় সেখান থেকে মশার জন্ম হচ্ছে। এছাড়াও সিটি করপোরেশনের অব্যবস্থাপনার কারণে যেখানে সেখানে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। আর এভাবে মশার বিস্তার আর উৎপাতে অতিষ্ঠ নগরবাসী। মশারি টাঙিয়ে, কয়েল জ্বালিয়ে, ইলেক্ট্রিক ব্যাট কিংবা মশানাশক ওষুধ স্প্রে করেও সুফল মিলছে না। সকালে মশার উপদ্রব একটু কম থাকলেও বিকেলে নিদিষ্ট স্থানে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার উপায় নেই।
গাজীপুর শহর ও আশপাশের বড় কয়েকটি এলাকা নিয়ে গঠিত ২৮ নম্বর ওয়ার্ড। এই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে মশার ওষুধ ছিটাতে দেখেননি। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জেলে থাকায় দায়িত্ব পালন করছেন ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন। জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ডিসি অফিস ও এসপি অফিসে মশার ওষুধ দেওয়া হয়েছে। অন্য এলাকাতে এখনো মশার ওষুধ ছিটানো হয়নি। যার কারণে মশার উৎপাত বেড়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এসব এলাকায় ওষুধ ছিটানো হবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, মশক নিধন কার্যক্রমের জন্য ২০১৭–১৮ অর্থবছরে সিটি করপোরেশনের ব্যয় দেখানো হয়েছে ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৬১৬ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই ব্যয় দেখানো হয়েছে ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৭০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ব্যায় ধরা হয় ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৮ লাখ ৩৪ হাজার, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৮ লাখ ৫০ হাজার এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ২০ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল।
এবিষয়ে জানতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক সোহেল রানা বলেন, নগর ভবন থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলদের অফিসে তাদের চাহিদা মতো মশার ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। এখন ওষুধ ছিটানোর দায়িত্বটা তাদের ওপর।
মাসুদ