সোনারগাঁয়ে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় মামলা
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
নিহত যুবক হৃদয় ভূইয়া
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নির্বাচনি সহিংসতায় হৃদয় ভূইয়া নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার (৯ মার্চ) রাতে নিহতের বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন ভূইয়া বাদী হয়ে নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী আজিজ সরকারসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং নাম না জানা অনেককে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় মামলাটি করেন। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গতকাল শনিবার উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হৃদয় নিহত হন। ওই ঘটনায় তার চাচাতো ভাই ওমর ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন: সোনারগাঁয়ে নির্বাচনি সহিংসতায় যুবক নিহত
নিহত হৃদয় ভূইয়া দুধঘাটা গ্রামের আমির আলী ভুঁইয়ার ছেলে। তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়া পরাজিত প্রার্থী কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইউপি সদস্য পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দুধঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচনে মোরগ প্রতীকে আব্দুল আজিজ সরকার ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ভোটগ্রহণ শেষে আজিজ সরকার মোরগ প্রতীকে ৯২৯ ভোট ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু ৮১১ ভোট পান। ফলাফল জানার পর ওই কেন্দ্রের প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে পরাজিত প্রার্থী কায়সার আহম্মেদ রাজু পুনরায় ভোট গণনার অনুরোধ করেন। পুনরায় ভোট গণনা করে রাজুর পক্ষে বান্ডেলে ভোট কম দেখতে পান। এ নিয়ে রাজুর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে তিনি প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তাকে তৃতীয় দফায় ভোট গণনার জন্য বলেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে রাজু কেন্দ্র থেকে বের হয়ে বিষয়টি তার কর্মী সমর্থকদের জানালে নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা লোকজনকে ব্যালট বাক্স নিয়ে উপজেলায় আসতে বাধা সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ, দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এসময় কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক হৃদয় ভূইয়া ও ওমর ফারুক গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও, সাখাওয়াত ভূইয়া, আপন ভূইয়া, মফিজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, রাশেদসহ আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে হৃদয় ভূইয়া মারা যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সাইফুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) খবিরউদ্দিন, কনস্টেবল মঞ্জু মিয়া, জুয়েল রানা, আব্দুস সালাম, কবির হোসেন, নূর মোহাম্মদ, আল আমিন আহত হন। পুলিশ সদস্যরা সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অনিক/মাসুদ