ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

শরীয়তপুর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ 

শরীয়তপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৮, ১৪ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১১:৩৭, ১৪ মার্চ ২০২৪
শরীয়তপুর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ 

হাসপাতালে স্বজনের আহাজারি

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় মুসাফির নামে ৪ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১৩ মার্চ) রাত ৮ টার দিকে সদর হাসপাতালে এ শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। 

শিশু মুসাফির শরীয়তপুর পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাজিব শেখ ও রুবিনা দম্পতির ছেলে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিন ধরে পেটে গ্যাস ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে ভূগছিলো শিশু মুসাফির। বুধবার দুপুরে শিশুটিকে নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন মা রুবিনা বেগম। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করছিলেন চিকিৎসক শরীফ-উর রহমান। শিশুটিকে ভর্তি করা হলে তরল জাতীয় একটি ঔষধ লিখে দেন তিনি। ঔষধটি খাওয়ানোর পর  শিশুটি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। অবস্থা খারাপ দেখে মা রুবিনা বেগম ও স্বজনরা বেশ কয়েকবার চিকিৎসককে ডেকে আনতে যান। তবে চিকিৎসক শরীফ-উর রহমান বিষয়টি আমলে না নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে আসেননি। এক পর্যায়ে কর্তব্যরত স্টাফ নার্স সীমা বৈদ্য বাধ্য হয়ে চিকিৎসককে ডাকতে গেলেও তিনি শিশুটির কোনো চিকিৎসা দিতে আসেননি। উপরন্তু শিশুটির অক্সিজেন মাস্ক খুলে তার কাছে নিয়ে যেতে বলেন। এরপর রাত ৮ টার দিকে শিশুটি মারা যায়। 

শিশুটির মা অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবু যখন অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে আমি নিচে দৌঁড়ে ডাক্তারকে ডাকতে যাই। তিনি আমাকে ধমক দিয়ে উপরে পাঠিয়ে দিয়ে বলেন, আমি আসতেছি। কিন্তু ডাক্তার আর আসেননি। আজ যদি আমার বাবুটাকে চিকিৎসা দেওয়া হতো, তাহলে বাবুটা বেঁচে থাকতো। 

বাবা রাজিব শেখ বলেন, ডাক্তারের অবহেলায় আমার বাচ্চা মারা গেছে। তাকে অনেকবার অনুরোধ করেছি বাবুকে দেখে যেতে। উনি আসেননি। আজ আমি ডাক্তারের জন্য সন্তানহারা হয়ে গেলাম। আমার বাচ্চার মতো আর কারও বাচ্চা যেন এভাবে চিকিৎসকের অবহেলায় মারা না যায়, আমাদের এটাই দাবী।

চিকিৎসকের অবহেলার বিষয়টি সামনে এনে হাসপাতালে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সীমা বৈদ্য বলেন, বাচ্চাকে প্রথমে আমি অক্সিজেন লাগিয়ে দিই। এরপর আমাকে বেশ কয়েকবার রোগীর লোক ডাকলে আমি বাচ্চাটাকে দেখে আসি। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাটার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ডাক্তারকে ডাকতে আমার ওয়ার্ড বয়কে দুইবার নিচে পাঠিয়েছি। যখন বাচ্চাটির খারাপ অবস্থা ছিলো তখন ডাক্তার আসলে হয়তো বাচ্চাটা বেঁচে থাকতো। 

এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শরীফ-উর রহমানকে মুঠোফোনে কল দিলে ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এমন অভিযোগ সত্য নয়। কেউ বাচ্চা নিয়ে জরুরী বিভাগে আসেনি।

এদিকে ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) মিতু আক্তার। তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে এক শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। যদি ওই চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আকাশ/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়