বিষ দিয়ে ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ মেরে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিষ দিয়ে দুর্লভ প্রজাতির ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ নামের কয়েকটি পাখি মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বালুর মাঠ সংলগ্ন তরমুজ খেতে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নয়াপাড়া গ্রামের তরমুজ খেতের পাশে কিছু দিন পর্যন্ত কয়েকটি দুর্লভ প্রজাতির ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ পাখি আসতে শুরু করে। নিচু একটি জায়গায় পানি জমে থাকায় সেখানে প্রতিনিয়ত খাবারের সন্ধানে আসছিল পাখিগুলো। কিছু দুষ্ট চাষি পানিতে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে পাখিগুলোকে ধরেন। পরে তারা পাখিগুলোকে জবাই করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, পানি জমে থাকা নিচু জায়গাটিতে ৮ থেকে ১০টি ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ পাখি নিয়মিত আসতো। মূলত ওরা প্রতিনিয়ত খাবারের সন্ধানেই এখানে আসতো। এখানের তরমুজ খেতের কিছু চাষি গতকাল কয়েকটি পাখি বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে ধরে ফেলেন। পরে পাখিগুলো জবাই করে বাড়িতে নিয়ে যান তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, পাখিগুলি দেখতে খুবই সুন্দর। গতকাল দেখলাম তরমুজ খেতের কিছু চাষিরা একটি পাখি ধরেছে। তারা খেতের পাশে বসেই পাখি জবাই করেছেন।
এ বিষয়ে অ্যানিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া টিমের সদস্য কে এম বাচ্চু বলেন, ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ দুর্লভ প্রজাতির পাখি। এই পাখি এখন খুব দেখা যায় না। তবে, কুয়াকাটা সৈকতের লেম্বুরবন এলাকায় কিছু পাখি থাকে। সেখান থেকেই মূলত এদিক-সেদিক খাবারের সন্ধানে যায় পাখিগুলো। গতকাল আমরা পাখি ধরে জবাই করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সত্যতা পাই। তবে আমরা এসব পাখি যেন আর না মারা হয় এজন্য চাষিদের সতর্ক করে এসেছি। আশা করছি চাষিরা আর কোনো পাখি মারবেন না।
মহিপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে স্পষ্ট বলা আছে, কোনো ধরনের বন্য পশু পাখি ধরা এবং মারা যাবে না। কেউ যদি পশু পাখি শিকারের দুঃসাহস দেখান তাদের বিরুদ্ধে আমর কঠিন ব্যবস্থা নেব। ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ পাখির বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পারলাম। আমরা এখন খোঁজ নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
ইমরান/মাসুদ