ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে যাত্রীর ভিড়, বাস সংকটে ভোগান্তি 

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ৮ এপ্রিল ২০২৪  
ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে যাত্রীর ভিড়, বাস সংকটে ভোগান্তি 

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ঈদের ছুটি ঘোষণার পরপরই ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। সড়কে যাত্রী বাড়ায় হঠাৎ করে যাতায়াত ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ।

সোমবার (৮ এপ্রির) দুপুরের পর থেকে শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট মাওনা চৌরাস্তা, গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি, মাধখলা, এমসি বাজার, নয়নপুর, পল্লী বিদ্যুৎ মোড় ও জৈনা বাজার বাসস্ট্যান্ডে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে সড়কের পাশে জড়ো হয়েছে শত শত। কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক গণপরিবহন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছে তারা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। এতে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রাক, পিকআপ, নসিমন, করিমন, অটোরিকশায় গন্তব্যে ছুটছেন কেউ কেউ। 

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে চার হাজারের বেশি কারখানা রয়েছে। সেখানে কর্মরত রয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলার কয়েক লাখ শ্রমিক। সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরের পর থেকে প্রায় সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছে। 

দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তার পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ের অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা বাসিন্দা আমিরের সঙ্গে। তিনি কাজ করেন উপজেলার মুলাইদ এলাকার কারখানায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। ছুটি পেয়ে বাসার সব গুছিয়ে এসে গাড়ির জন্য দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছেন। তবে বাস পাননি। অবশেষে ট্রাকে বাড়ি ফিরতে চান তিনি। তবুও তা মিলছে না। 

কথা হয় হালুয়াঘাটের বাসিন্দা কবির মিয়ার সঙ্গে। তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অসুস্থ মা-বাবার সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যাচ্ছি। কিন্তু রাস্তায় ভোগান্তি। গণপরিবহন সংকট। বাস না পেয়ে ট্রাকে চড়ে রওনা দিচ্ছি। নিজে কোনোমতে উঠে স্ত্রীকে টেনে তুলেছি।’ 

তিনি আরও জানান, সড়কে খালি বাস নেই। যে বাস আসছে, তাতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস মিলছে না। 

এমসি বাজার বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় সামিয়া আক্তার নামে এক শ্রমিকের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘চাকরির সুবাদে শ্রীপুরে থাকি। বাড়িতে ঈদ করতে যাব। কারখানা ছুটি শেষে অনেকক্ষণ বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। ট্রাক, পিক-আপে যেতে চাইলেও ভাড়া কয়েকগুণ বেশি। ১০০ টাকার ভাড়া ৪০০ টাকা। তবুও তা পাওয়া দুষ্কর। ঈদে বাড়ি ফিরতে সব সময় ভোগান্তি হয়, তবে এই ঈদে অনেক বেশি ভোগান্তি হচ্ছে। সড়কে বাস নেই বললেই চলে।’ 

মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ মাহমুদ মোর্শেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ট্রাক, পিক-আপসহ ঝুঁকিপূর্ণ যানে উঠতে যাত্রীদের নিষেধ করা হচ্ছে। অবৈধ যানবাহনকে জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। একইসঙ্গে সব কলকারখানা ছুটি হওয়ার কারণে মহাসড়কে হঠাৎ করে যাত্রীর চাপ বেড়েছে।’ 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আকবর আলী খান রাইজিংবিডিকে বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ করতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ কাজ করছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। 

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাইজিংবিডিকে বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষকে নিরাপদে পৌঁছে দিতে উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কে মনিটরিং করছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে গণপরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

রফিক/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়