ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

এমপির উপস্থিতিতে পুলিশ ফাঁড়িতে যুবলীগের ২ নেতার ওপর হামলা

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১১, ৮ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ০৮:৪৯, ৯ এপ্রিল ২০২৪
এমপির উপস্থিতিতে পুলিশ ফাঁড়িতে যুবলীগের ২ নেতার ওপর হামলা

যুবলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে বগুড়া শহর শাখা যুবলীগ

বগুড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সদর আসনের (বগুড়া-৬) সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর উপস্থিতিতে সদর পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে দুই যুবলীগ নেতাকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে শহরের নবাববাড়ী রোডস্থ ফাঁড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

এদিকে ওই ঘটনায় যুবলীগের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে যুবলীগের শহর শাখা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন করেছে। তারা ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দি‌য়ে‌ছে।

হামলায় আহত দুই যুবলীগ নেতা হলেন- জেলা যুবলীগর উপ-প্রচার সম্পাদক জিয়াদুস শরীফ পরাগ ও জেলা যুবলীগের সদস্য আদনান। এদের মধ্যে যুবলীগ নেতা পরাগ বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

পুলিশ ও যুবলীগ সূত্র জানায়, গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শজাহানপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রঞ্জু শহরে সাতমাথায় জিলা স্কুলের পাশ দিয়ে মুজিবমঞ্চের দিকে আসার সময় একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি পরে যান। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা পিরব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ মিল্টনের ছেলে আবির। মোটরসাইকেল চালক ক্ষমা চাইলে ঘটনাটি তাৎক্ষনিক মিটে যায়। পরে আবিরের সঙ্গে সদর আসনের সংসদ সদস্যের ছেলে প্রতীক আহসান ৩০/৪০ জনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসলে পুনরায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত যুবলীগ নেতারা থামাতে গেলে তাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ দুই পক্ষকে শান্ত করে। পরে পুলিশ বিষয়টি সমাধানের  জন্য ছাত্রলীগ নেতা রঞ্জু, যুবলীগ নেতা পরাগ এবং আদনানসহ তাদের সঙ্গে থাকা চাকরিজীবী রঞ্জন নামে আরেক যুবক এবং অন্য পক্ষের আবির ও সংসদ সদস্যের ছেলেসহ ইউপি চেয়ারম্যান মিল্টনকে সদর ফাঁড়িতে ডেকে নিয়ে যায়।ফাঁড়িতে বিষয়টি প্রায় সমাধানও হয়েছিলো। কিন্তু রাত ১১ টার দিকে বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য দলবলসহ গেলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।

বগুড়া সদর ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. সুজন মিয়া জানান, তাদের ফাঁড়ির ভেতর অফিস কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। ঝামেলা এড়াতে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। 

যুবলীগ নেতা পরাগ জানান, সংসদ সদস্য ফাঁড়িতে আসছেন জেনে তিনি তাকে রিসিভ করতে এবং মূল ঘটনা জানাতে ফাঁড়ির অফিস কক্ষ থেকে বের হচ্ছিলেন। এসময় তার ওপর হামলা করে সংসদ সদস্যের সঙ্গে আসা লোকজন। এরপর সংসদ সদস্যের সামনেই তাকে মারধর করা হয়। জেলা যুবলীগের সদস্য আদনানকেও মারধর করা হয়। 

বগুড়া জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মাইসুল তোফায়েল কোয়েল বলেন, সদর আসনের সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে যুবলীগ নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। এটি ন্যাক্কারজনক। আমরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী কর্মসূচি নেওয়া হবে। 

বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু জানান, পরাগ গত নির্বাচনে নৌকার সক্রিয় কর্মী ছিল। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। যা ঘটেছে, আমার অজ্ঞাতসারে ঘটেছে। ঘটনাটি দুঃখজনক।

এদিকে যুবলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার বিকেল ৫টায় শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন করে বগুড়া শহর যুবলীগ। শহর যুবলীগের সভাপতি মাহফুজুল আলমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক উদয় কুমার বর্মনের সঞ্চালনায় এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মাইসুল তোফায়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক জাকারিয়া আদিল প্রমুখ। বক্তারা যুবলীগ নেতার ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এনাম/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়