ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১১ ১৪৩১

নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে বিষু উৎসব শুরু 

বান্দরবান প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ১২ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ১২:১২, ১২ এপ্রিল ২০২৪
নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে বিষু উৎসব শুরু 

সাঙ্গু নদীতে ফুল নিবেদন করে পূজা করছেন চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের তরুণ ও তরুণীরা

সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে সাঙ্গু নদীতে জলবুদ্ধ ও ‘মা’ গঙ্গাকে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ সামাজিক বিঝু ও বিষু উৎসব শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে নদীতে ফুল নিবেদন করেন চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশুরা। 

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১টি সম্প্রদায়ের মধ্যে শুধু বম, লুসাই, পাংখোয়া তিনটি সম্প্রদায় ছাড়া অন্য সব সম্প্রদায় ভিন্ন ভিন্ন নামে এই বৃহৎ সামাজিক উৎসব প্রতিবছর পালন করে থাকেন। 

চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় শুক্রবার ফুল দিয়ে নদীতে পূজা শেষ করেন। তারা বাড়িঘর ফুল দিয়ে সাজান। শনিবার (১৩ এপ্রিল) ঘরে ঘরে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজন করা হয়। এসময় একে অপরের বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছাড়াই যেতে হয়। আধুনিককালে এখন অনেকে একে অপরকে নিজেদের বাড়িতে আমন্ত্রণ করে থাকেন। রোববার (১৪ এপ্রিল) বয়োজ্যােষ্ঠদের গোসল করিয়ে তরুণ-তরুণীরা তাদের আর্শীবাদ নেবেন। ভালো উন্নত মানের খাবার আয়োজন করে ঘনিষ্ট আত্মীয়, এলাকার বয়োজ্যােষ্ঠদের ঘরে এনে আপ্যায়ন করা হয়। 

আরো পড়ুন:

মমিতা চাকমা বলেন, প্রতিবছর ১২ এপ্রিল পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। গতবছর ভালো ছিলাম, আগামী বছরও ভালো থাকার আর্শীবাদ প্রার্থণা করে জল বুদ্ধ ও মা গঙ্গাকে ফুল ভাসিয়ে পূজা করি।

সুচিত্রা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, নদীতে ফুল দিয়ে পূজা করা আমাদের ঐতিহ্য। প্রতিবছর ১২ এপ্রিল তিন পার্বত্য জেলার ১১টি সম্প্রদায় উৎসব মুখর পরিবেশে বিষু উৎসব পালন করে থাকেন। জল বুদ্ধ, ‘মা’ গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করে পরিবার তথা সবার মঙ্গল কামনা করতে নদীতে ফুল নিবেদন করা হয়।  

এদিকে ‘প্রতিটি ফোঁটা-ই হোক শান্তির দূত, পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারায়’ এই স্লোগানে আগামী শনিবার থেকে চারদিন ব্যাপী বান্দরবান পাহাড়ী অঞ্চলে শুরু হচ্ছে জলকেলী উৎসব বা মাহা সাংগ্রাই পোয়ে। গত বুধবার স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি মংমংসিং মারমা ও সাধারণ সম্পাদক উক্যসিং মারমা।

এবার বান্দরবানের সার্বিক প্রেক্ষাপটে এবারের চাকমাদের বিঝু, তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু, মারমাদের সাংগ্রাইং ও ত্রিপুরাদের বৈসু একটু ভিন্ন। গত ২ এপ্রিল ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে কেএনএফ কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতি অস্ত্র লুটের ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান চলছে। ফলে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি দুর্গম এলাকাগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফলে ওই সব এলাকায় বৈসাবি তেমন উৎসব মুখর পরিবেশে পালন হচ্ছে না।

চাইমং/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়