সুন্দরবনে পর্যটকদের ঢল
বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

পবিত্র ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের টানা ছুটিতে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সের পর্যটকরা ম্যানগ্রোভ (সমুদ্র উপকূলবর্তী) বনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন। করমজল, হারবারিয়া, হিরণ পয়েন্ট, কচিখালী ও দুবলার চরসহ ভ্রমণ বনের প্রতিটি স্পটে ঘুরে আনন্দ উপভোগ করছেন তারা।
ঈদের তৃতীয় দিন শনিবার (১৩ এপ্রিল) সুন্দরবনের করমজল পয়েন্টে ভ্রমণ করেছেন প্রায় দেড় হাজারের বেশি পর্যটক। বৃহস্পতিবার ঈদের দিন থেকে শনিবার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটক এই পয়েন্ট থেকে সুন্দরবনে ভ্রমণ করেছেন। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের দীর্ঘ সরকারি ছুটির কারণে আগামী কয়েকদিন পর্যটকের চাপ অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছে বন বিভাগ।
ঢাকা থেকে সুন্দরবনে ঘুরতে আসা আবির আহমেদ বলেন, অনেকদিন থেকে ইচ্ছা ছিল সুন্দরবন ঘুরতে আসবো। ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে মোট ৬ দিনের ছুটি পেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে সুন্দরবনে চলে এলাম। এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। বিভিন্ন রকম বন্যপ্রাণী দেখলাম। নিজ হাতে হরিণকে গাছের পাতা খাইয়েছি। কাছ থেকেই বানরের লাফালাফি দেখেছি। সুন্দরবনের এই বন্য পরিবেশ দেখে অনেক ভালো লাগছে।
পর্যটক রাতুল হাসান বলেন, মোংলা থেকে সুন্দরবনের করমজল পয়েন্টে আসা খুবই সহজ। প্রতিবছর ঈদের সময় বন্ধুরা মিলে মোংলা থেকে ট্রলার ভাড়া করে সুন্দরবনে আসি। এবছর মানুষের চাপ একটু বেশি, ফলে ট্রলার ভাড়া নিতে একটু হিমশিম খেতে হয়েছিল। আজ করমজল পয়েন্ট ঘুরেছি, কাল হারবাড়িয়াসহ আরো কিছু স্পট ঘুরবো।
অপর পর্যটক মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, পরিবারের সঙ্গে সুন্দরবনে এসে ঈদের আনন্দ বহুগুণ বেড়ে গেছে। এর আগে চিড়িয়াখানায় অনেক বন্যপ্রাণী দেখেছি। অনেক ইচ্ছা ছিল সুন্দরবন এসে খোলা পরিবেশে বন্যপ্রাণী দেখার। ঈদ ও নববর্ষের ছুটি পেয়ে সেই ইচ্ছা পূরণ হলো। গাছ গাছালির ভেতর থেকে হেঁটে বনের আসল পরিবেশ উপভোগ করেছি। কচ্ছপ, কুমির, বানর, হরিণ এবং বিভিন্ন রকমের পাখি দেখে ভালো লাগছে।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে লম্বা সরকারি ছুটির কারণে করমজল পয়েন্টসহ সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলোতে মানুষের ভিড় বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ আসছেন। ঈদের দিন থেকে শনিবার পর্যন্ত তিন দিনে প্রায় ৫ হাজারের বেশি পর্যটক করমজল পয়েন্ট থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছেন। অতিরিক্ত পর্যটকের আগমনে যাতে বনের পরিবেশ নষ্ট না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখছি। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমাদের কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেন।
শহিদুল/মাসুদ