ঢাকা     সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

তীব্র গরম ও লোডশেডিং

ফেনীতে চাহিদা বেড়েছে চার্জার ফ্যানের, বেড়েছে দামও

মো. সাহাব উদ্দিন, ফেনী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১০, ২৩ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ১৭:২৯, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
ফেনীতে চাহিদা বেড়েছে চার্জার ফ্যানের, বেড়েছে দামও

নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দোকান থেকে চাজিং ফ্যান কিনছেন একজন নারী ক্রেতা

চলমান তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ফেনীর জনজীবন। তীব্র গরমে কিছুটা প্রশান্তি পেতে চার্জিং ফ্যান কিনতে সাধারণ মানুষ ভিড় করছেন ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে। চাহিদা বাড়ায় এখন দোকানদাররা ইচ্ছামতো এই পণ্যটির দাম চাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) ফেনী শহরের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, গরম থেকে বাঁচতে সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেতারা চার্জার ফ্যান কিনতে ভিড় করছেন বিভিন্ন দোকানে। ফলে বিক্রিও বেড়েছে এসব ফ্যানের। গত বছরের তুলনায় আকারভেদে চার্জার ফ্যানের দাম বেড়েছে ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। অনেক মানুষকেই নষ্ট হওয়া ফ্যান মেরামতে পাড়া-মহল্লার ইলেকট্রিকের দোকানে যেতে দেখা গেছে। সেখানে চলছে স্বল্প অর্থে মধ্যবিত্তের খরচ কমানোর চেষ্টা। 

শহরের কলেজ রোডের একটি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা স্বপ্না আক্তার বলেন, গত কয়েকদিন গরমের সঙ্গে ৭-৮ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। ফ্যানের দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। তারপরও পরিবারে শিশু ও বয়োবৃদ্ধের কষ্টের কথা চিন্তা করে ফ্যান কিনতে হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

শাহজালাল নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, আমার দুই সন্তানের সামনে স্নাতক ও এইচএসসি পরীক্ষা। এ অবস্থায় গরম আর লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো পড়ালেখা হচ্ছে না ওদের। সেজন্যই চার্জার লাইট ও ফ্যান কিনতে এসেছি। দীর্ঘদিন পর কিনতে আসলেও এবার দাম বাড়তি মনে হচ্ছে।

শ্রাবন্তী চৌধুরী নামের ক্রেতা বলেন, সবদিক থেকে আমরা সাধারণ মানুষ একটি অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে আছি। এতো গরমে বাসায় থাকার উপায় নেই। ১০ মাস আগে যে ফ্যান কিনেছি সেই একই সাইজের ফ্যানের দাম এখন ৪০০ টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে, দোকানিরা সুযোগ বুঝেই ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছেন। নিরুপায় হয়েই কিনতে হচ্ছে। 

শহরের সহদেবপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মমিন মিয়া নামে এক রিকশাচালক বলেন, আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষজন তো বাড়তি টাকা দিয়ে ফ্যান-লাইট ব্যবহার করতে পারবে না। আমাদের মোমবাতি আর হাতপাখাই ভরসা।

মিজান রোডস্থ লিটন ইলেকট্রিকের স্বত্বাধিকারী নিমাই ভৌমিক বলেন, রমজান মাস থেকে বৈদ্যুতিক পাখা, চার্জার ফ্যান, আইপিএসের বিক্রি বেড়েছে। দাম কিছুটা বাড়লেও অন্যান্য পণ্যের বাজারদরের চেয়ে তুলনামূলক কম বেড়েছে। কোম্পানি দাম বাড়ালে আমাদের পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের করার তেমন কিছু থাকে না।

রংধনু ইলেকট্রিকের মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে গত কিছুদিন ধরে চার্জার ফ্যানের বিক্রি বেশি হচ্ছে। এটি মৌসুমি ব্যবসা। শুধুমাত্র গরম এলেই এধরনের বেচাকেনা হয়। ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যান ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা, ১৪ ও ১৮ ইঞ্চির ফ্যান ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

হীরা ইলেকট্রিকের মালিক নুরুল করিম হীরা বলেন, চার্জার ফ্যানের দাম কিছুটা বাড়লেও সিলিং ফ্যান আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। নন-ব্যান্ড সিলিং ফ্যান ১৫০০ টাকায় এবং ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান ২৮০০ টাকা থেকে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে স্ট্যান্ড ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা থেকে ৮ টাকার বেশি দামে। 

এদিকে, চলমান দাবদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ফেনী আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগে মাঝারি থেকে তীব্র তাপদাহ প্রবাহিত হচ্ছে। ফেনীতে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ৩৬ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান তাপপ্রবাহ আগামী মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়