ঢাকা     সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

অর্থাভাবে বন্ধ মসজিদের সংস্কার, নামাজ হচ্ছে গোডাউনে 

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ২৩ এপ্রিল ২০২৪  
অর্থাভাবে বন্ধ মসজিদের সংস্কার, নামাজ হচ্ছে গোডাউনে 

বরাব (শুয়াপুর) জামে মসজিদ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি গ্রামে গত দুই বছর ধরে অর্থাভাবে বন্ধ রয়েছে মসজিদের সংস্কার কাজ। ফলে বছরখানেক ধরে অন্যের গোডাউনে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। বিনা ভাড়ায় গোডাউনে মুসল্লিদের নামাজের সুযোগ করে দেওয়ায় প্রশংসিত হয়েছেন রিপন রহমান ও নাজমা বেগম দম্পতি। মসজিদ সংস্কারে সবার সহযোগিতা দাবি করেছেন গ্রামের প্রায় সাত শতাধিক মানুষ।

জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার শেষ প্রান্তের গ্রাম বরাব শুয়াপুর। এক সময় এই গ্রামে জনসংখ্যা ছিল অনেক কম। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বিভিন্ন জেলার লোকজন এখানে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। বর্তমানে এই গ্রামে প্রায় সাত শতাধিক মানুষ বসবাস করছেন। এখানে বসবাসকারীদের বেশিরভাগ হতদরিদ্র। গ্রামের মানুষদের নামাজের জন্য চাঁন মিয়া মাতাব্বর নামের এক ব্যক্তি মসজিদের নামে নিজের জমি ওয়াকফ করে দেন। এরপর গ্রামের সবাই মিলে মাটি ভরাট করে বরাব (শুয়াপুর) জামে মসজিদ স্থাপন করেন। কিন্তু, দুই বছর আগে উন্নয়নের লক্ষ্যে মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয়। এরপর মসজিদের পাশে ছাপড়া দিয়ে নামাজ আদায় করে আসছিলেন মুসল্লিরা। কিন্তু সেটাও অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর গত এক বছর ধরে পাশের একটি গোডাউনে নামাজ আদায় করে আসছেন গ্রামবাসী।  

মসজিদটি তৈরিতে পাঁচ তলা ভবনের ফাউন্ডেশন দিয়ে কাজ শুরু হয়। বর্তমানে শুধু নিচ তলার পিলার দাঁড়িয়ে আছে। দুই বছর ধরে অর্থাভাবে মসজিদের সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে নিরুপায় হয়েই রিপন রহমান ও নাজমা বেগম দম্পতির গোডাউনে মসজিদ কার্যক্রমসহ নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। এই দম্পতি গোডাউনটি ব্যবহারে ভাড়া না নেওয়ায় খুশি গ্রামবাসী।   

আরো পড়ুন:

কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ বলেন, খবর পেয়ে আমি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কিছু অনুদান দিয়েছি। ভবিষ্যতেও তাদের সহযোগী করবো।

গোডাউনের মালিক নাজমা বেগম বলেন, গত ২৫ বছর আগে মানিকগঞ্জ থেকে এসে এখানে বসবাস শুরু করি। এরও আগে, মসজিদটি নির্মাণ হয়। টাকার অভাবে মসজিদের সংস্কার বন্ধ রয়েছে। নামাজের উপযুক্ত স্থান না থাকায় আমাদের গোডাউন ব্যবহার করতে দিয়েছি। মুসল্লিরা গোডাউনটির ভাড়া দিতে চাইলেও আমরা নেয়নি। যতদিন পর্যন্ত মসজিদের কাজ না হবে, ততদিন তারা এটা (গোডাউল) ব্যবহার করতে পারবেন। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। 

মসজিদ কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগে এই পুরো গ্রাম প্রায় খালি ছিল। মসজিদের কিছু কাজ করার পর টাকার অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন কিছু অনুদান পেয়েছি। গ্রামের সবাই সহযোগিতা করছেন। খুব দ্রুত কাজ শুরু করবো।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সারোয়ার আলম বলেন, ওই মসজিদের এমন অবস্থার কথা আগে জানা ছিল না। আবেদন করলে মসজিদের উন্নয়ন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রেজাউল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়