দেশে জমিদারি বন্দোবস্ত কায়েম করা হয়েছে: সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, দেশে একটা জমিদারি বন্দোবস্ত কায়েম করা হয়েছে, যেখানে ভোট বলে আর কিচ্ছু নেই। 

শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় রাজশাহীতে প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

রাজশাহী মহানগরীর গণকপাড়ার কমিউনিটি সেন্টারে গণতন্ত্র মঞ্চ জেলা শাখার উদ্যোগে ‘সরকার ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হোন’ শীর্ষক বিভাগীয় প্রতিনিধি সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় জোনায়েদ সাকি বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন জনমানবশূন্য বিরানভূমি বানিয়ে জনগণ তার অবস্থান প্রকাশ করেছে। আজকে সারা দুনিয়াব্যাপী লড়াই চলছে। এই লড়াই নানা দেশে নানান অবস্থার মধ্যে আছে। পাশের দেশ ভারতেও এক ধরনের কর্তৃত্ববাদের বিকাশ ঘটেছে। ভারতের মানুষ ভোট দিতে পারছে, এমনকি পাকিস্তানের মানুষও ভোট দিতে পারছে কিন্তু গণনা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু বাংলাদেশে একটা জমিদারি বন্দোবস্ত কায়েম করা হয়েছে, যেখানে ভোট বলে আর কিচ্ছু নেই। সমস্ত ভোট ব্যবস্থা তারা উঠিয়ে দিয়েছে। 

এ সময় ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের প্রসঙ্গ টেনে সাকি বলেন, ‘এস আলম গ্রুপ আর শত কোটি হাজার কোটিতে নেই, লাখো কোটি সম্পদের মালিক হয়েছে। একাই একে একে সাতটি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তা কত টাকা বেতন পান, অথচ বেনজিরের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা থাকে। বিদেশে কত কোটি টাকা তা তো আমরা জানিই না। নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে কিছুটা বেরিয়ে যায়। তবে শুধু বেনজির সাহেবেরই নন, সরকারকে যারাই অবৈধ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থাকতে সহযোগিতা করেছে, নানাভাবে ধনসম্পদ আহরণ করার মাধ্যমে তারা এসব করেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বাড়ায়, গ্যাসের দাম বাড়ায়, দ্রব্যমূল্যের দাম সিন্ডিকেট তৈরি হয়, লাখো কোটি টাকা জনগণের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বড় লোকের পকেটে ঢুকায়, এটাই তাদের ব্যবস্থা। আপনি কথা বলতে পারবেন না। ফেসবুকে দু লাইন স্ট্যাটাস লিখলে মধ্যরাতে আপনাকে ধরে নিয়ে আসা হবে। সাংবাদিকরা লিখলে তার বিরুদ্ধে আইসিটি, ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট ও সাইবার সিকিউরিটি আইনে তারা মামলা দিয়ে দেবে। আপনি যাতে রাজনীতিতে না আসেন, মিছিলে না আসেন, দল করতে সাহসই না করেন এটাই লক্ষ্য।'

তিনি আরও বলেন, আজকে এমন একটা বন্দোবস্ত তৈরি হয়েছে যার অধীনে আর একটি নির্বাচনও হতে পারে না। এর অধীনে আর বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। যদি ভোটের অধিকার চাই, মানবিক মর্যাদা চাই, তাহলে এই সরকারের পতন যেমন করতে হবে তেমনই এই শাসন ব্যবস্থা বদল করতে হবে। 

ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব ড. আবু ইউসুফ সেলিমের সভাপতিত্বে ও গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক মুরাদ মোর্শেদের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি'র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রউফ মান্নান।