ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২১ ১৪৩১

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা

গোপালগঞ্জে নিহত ব্যক্তির মরদেহ নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০০, ১৫ মে ২০২৪  
গোপালগঞ্জে নিহত ব্যক্তির মরদেহ নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ

গাছের গুঁড়ি ফেলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চেনানিয়াকান্দিতে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিহত মো. ওয়াসিকুর রহমান ভূঁইয়ার লাশ নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। এসময় তারা গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং আগুন জ্বালিয়ে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। বুধবার (১৫ মে) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হয়। পরে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম ও পুলিশ সুপার আল-বেলি আফিফা দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক থেকে সরে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরবর্তী জয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান ভূইয়া ও পরাজিত প্রার্থী বিএম লিয়াকত আলীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন পরাজিত বিএম লিয়াকত আলীর সমর্থক মো. ওসিকুর ভুইয়া। আহত হন আরও পাঁচ জন।

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১

ওই ঘটনায় আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে নিহত ওয়াসিকুর রহমান ভূঁইয়ার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় লোকজন। পরে তারা মিছিল করে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চেনানিয়াকান্দিতে যান। মিছিলে চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের কয়েক হাজার লোক অংশ নেন। দুপুর ১২ টার দিকে তারা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে অবস্থান নেন। তারা হামলার ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে অবেরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ফলে মহাসড়কে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে মোতায়েন ছিল বিজিবি, পুলিশসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম ও পুলিশ সুপার আল-বেলি আফিফা দোষিদের বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে এক ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা।

এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল আলম কাকন, উপ-প্রচার সম্পাদক শিমুল চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী বিএম লিয়াকত আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলিমুজ্জামান বিটু, জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি শেখ সাহবুদ্দিন হিটু, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জায়েদ মাহামুদ বাপ্পি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস হক বলেন, যে হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক। সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। আমরা প্রতাশা করছি, প্রশাসন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করবে।

গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আল-বেলি আফিফা বলেন, অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। দোষিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে আশ্বস্ত করলে তারা অবরোধ তুলে নিয়েছেন। আমার ইতোমধ্য হত্যার বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। এ ঘটনায় এখন পযর্ন্ত মামলা না হলেও আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। স্বচ্ছভাবে ফলাফলা ঘোষণা করা হয়েছে। দুই প্রার্থী মধ্যে ভোটের ব্যবধান কম ছিল। আমাদের দেশে একটা কালচার আছে নির্বাচনে পরাজিত হলে বিভিন্ন প্রকার প্রশ্ন তোলা হয়।

তিনি আরো বলেন, জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি, আনসার ব্যাটেলিয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। অবৈধ কোনো অস্ত্র ব্যবহার হলে তা উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যহত থাকবে।

বাদল/মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়