ঢাকা     শনিবার   ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৭ ১৪৩১

ছাই-শব্দদূষণ: তীব্র গরমেও বন্ধ রাখতে হয় ঘরের জানালা

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪২, ১৯ মে ২০২৪   আপডেট: ১২:৪৪, ১৯ মে ২০২৪
ছাই-শব্দদূষণ: তীব্র গরমেও বন্ধ রাখতে হয় ঘরের জানালা

তীব্র গরমের পাশাপাশি আছে লোডশেডিং। একটু স্বস্তির জন্য দরজা জানালা খুললেই বাধে বিপত্তি। হাইড্রোক্সাইড নিটওয়্যার লিমিটেড নামে একটি কারখানার জেনারেটরের তীব্র শব্দের পাশাপাশি পোড়া তুষের ছাইয়ে ভরে যায় ঘরের মেঝে, বিছানা এমনকি রান্না করা খাবারও।

রোববার (১৯ মে) গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক-চেয়ারম্যান বাড়ি রোডের ঘনবসতিপূর্ণ একটি আবাসিক এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটির পেছনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশেই হাইড্রোক্সাইড নিটওয়্যার লিমিটেড নামে একটি সোয়েটার কারখানায় ব্যবহৃত জেনারেটর ও তুষ চালিত বয়লার মেশিন থেকেই বাতাসে ভেসে আসে অসহনীয় শব্দ এবং তুষের পোড়া ছাই। প্রতিনিয়ত জেনারেটরের অসহনীয় উচ্চশব্দ এবং বয়লার মেশিনে ব্যবহার করা তুষের পোড়া ছাইয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এলাকার বাসিন্দারা।

আরো পড়ুন:

স্থানীয় বাসিন্দা কাজী শাহ নেওয়াজ বলেন, ৮-১০ বছর ধরে হাইড্রোক্সাইড নিটওয়্যার লিমিটেড নামের সোয়েটার কারখানাটির জেনারেটর মেশিনের শব্দ ও বয়লার মেশিনের তুষের পোড়া ছাই চিমনির মাধ্যমে বাতাসে ভেসে ঘরে আসে। তুষ পোড়া ছাই ও জেনারেটরের উচ্চশব্দের হাত থেকে বাঁচতে আবহাওয়া এত গরম হওয়া সত্ত্বেও আমরা বাধ্য হয়েই ঘরের দরজা জানালা সবসময়ই বন্ধ করে রাখি।

ফারুক মিয়া নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, উচ্চশব্দের ফলে বাসায় থাকা নারী ও শিশুদের মেজাজ সবসময় খিটখিটে থাকে। এলাকার বেশিরভাগ মানুষই শ্রবণপ্রতিবন্ধী হয়ে যাচ্ছে। তুষ পোড়া ছাই বাতাসে ভেসে এসে চোখে পড়ায় অনেককেই চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গত ১০ বছর ধরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। তারা সবসময় সমাধানের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো নির্ভরযোগ্য সমাধান করেনি।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আকবর মোল্লা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, হাইড্রোক্সাইড নিটওয়্যার লিমিটেড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কয়েক দফা বৈঠক করেছি। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথাই শোনে না। তারা এ এলাকার মানুষদের মানুষই মনে করে না। সারা দেশে সরকার পরিবেশধ্বংসকারী ইটভাটা ভেঙে ফেললেও অজানা কারণেই বছরের পর বছর ধরেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে হাইড্রোক্সাইড নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানাটি।

এ বিষয়ে হাইড্রোক্সাইড নিটওয়্যার লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আব্দুর রহিম বলেন, বর্তমানে জেনারেটরের শব্দ একটু বেশি হচ্ছে। তবে পোড়া তুষের ছাইয়ের পরিমাণ আগের থেকে কিছুটা কমেছে। কারখানার মালিকপক্ষ দেশের বাইরে থাকায় সমস্যাটি সমাধান করতে পারছি না।

গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নয়ন মিয়া বলেন, ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব। যদি স্থানীয়দের অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

রেজাউল/ইমন/কেআই

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়