উপজেলা নির্বাচন
গাইবান্ধায় এজেন্ট বের করে দিয়ে জাল ভোটের অভিযোগ
মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন, গাইবান্ধা থেকে || রাইজিংবিডি.কম

ছবি: রাইজিংবিডি
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৫ কেন্দ্রে আনারস মার্কার প্রার্থী শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে এজেন্ট বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখল ও জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ করেছেন মোটরসাইকেল মার্কার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল লতিফ প্রধান।
মঙ্গলবার (২১ মে) বেলা বারটার দিকে নির্বাচনী এলাকার দশলাল দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে সাংবাদিকদের তিনি এসব অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোকাররম হোসেন ও পরিদর্শনে আসা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সামনে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল লতিফ সাংবাদিকদের জানান, দশলাল দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের লোকজন বহিরাগতদের নিয়ে এসে আমার বেশিরভাগ এজেন্ট বের করে দিয়েছে। তারা জাল ভোট দিচ্ছে। ব্যালট পেপার নিয়ে নিজেরাই সিল মারছে। আমার যে কয়জন এজেন্ট রয়েছে, তারা প্রতিবাদ করলে মেরে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে এজেন্টরা প্রিজাইডিং অফিসারকে তাৎক্ষণিক অভিযোগ দিলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী আরও অভিযোগ করেন, এভাবে পনের কেন্দ্রে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। তারা মোটরসাইকেলের সমর্থকদের ভোট দিতে দিচ্ছে না। আমার ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারেন সেজন্য এলাকায় এলাকায় মহড়া বসিয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে অনিয়মের বিষয়ে তাৎক্ষণিক রিটার্নিং অফিসার, স্থানীয় ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কেন্দ্রের মোটরসাইকেল প্রার্থীর এজেন্ট আবু জাফর জানান, আনারস মার্কা প্রার্থীর লোকজন এসে বের হওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমাদের সহকর্মী মিজানুল ইসলাম, সাগর, সুগন্ধা, শাহনুরকে বের করে দিয়েছে।
কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ ভোটার বলেন, তেমন কেনো ভোটার নাই, ভোট দিতে বিশ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু ভেতরে ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ আমার চোখের সামনে এক ব্যক্তি সাত আটবার জাল ভোট দিচ্ছে।
এজেন্ট বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা, জাল ভোটসহ অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রের প্রিজাইজিং অফিসার মো. মোকাররম হোসেন বলেন, এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। আর আমার কেন্দ্রে জাল ভোট, ব্যালট পেপার কেটে সিল মারা, কেন্দ্র দখলের চেষ্টা অসম্ভব।
তবে তিনি বলেন, কেন্দ্রের বাইরে চেচামেচি করে কেন্দ্রের ভেতরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার অভিযোগ পেয়েছিলাম। সাথে সাথে ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি জানান, তার নির্বাচনী কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩৭০৫ জন। তার মধ্যে সকাল দশটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৬৯টি।
এদিকে, সাড়ে এগারটার দিকে যখন দশলাল দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে জাল ভোট ও ভোট দিতে না পারা নিয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল, তখনই কেন্দ্রে এসে উপস্থিত হয় নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুইপক্ষকে সরিয়ে দেন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় মোটরসাইকেলের প্রার্থী আব্দুল লতিফ প্রধানও হাজির হন। তিনি প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া, জাল ভোট, ভোট কেটে নেওয়াসহ নানা অভিযোগ তুলেন।
এ বিষয়ে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি এ কেন্দ্রে অনিয়মের কোনো অভিযোগ লিখিতভাবে পাননি এবং কারও অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রে আসেননি বলেও জানান তিনি।
/এসবি/