রেমালের তাণ্ডব
খুলনার ৫৫ পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত লোকালয়
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম
ছবি: রাইজিংবিডি
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে খুলনার দাকোপ, পাইকগাছা ও কয়রার ৫৫ পয়েন্টে বাঁধে ভাঙন ও বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করেছ লোকালয়ে। লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ভেঙে গেছে ঘর-বাড়ি, ভেসে গেছে ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের-পুকুর।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে নগরীর রয়েল মোড়, লবণচরা, টুটপাড়া, মহিরবাড়ি খাল পাড়, শিপইয়ার্ড সড়ক, রূপসা, চানমারী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালেও নগরীর বেশ কিছু এলাকায় সড়ক ও বাড়িঘর প্লাবিত দেখা গেছে। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছে এসব এলাকার মানুষ।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল হুসেইন খাঁন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডবে খুলনার উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে ৫৫টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ও উপচে প্লাবিত হয়েছে অসংখ্য গ্রাম। এরমধ্যে ৩২টি পয়েন্টে ১ দশমিক ৭০৫ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। আর ২৩টি পয়েন্টের ৩ দশমিক ৬৮৮ কিলোমিটার বাঁধ ওভারফ্লো হয়েছে।
তিনি জানান, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ। ১২ হাজার ৭১৫ দশমিক ৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও ৭ হাজার ২৮৩ হেক্টর জমির ৫ হাজার ৫৭৫টি মাছের ঘের এবং ৩০৭ হেক্টর জমির ৩ হাজার ৩০০টি পুকুরের মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ উপজেলায় পানি প্রবেশ করে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার দিবাগত রাতে জোয়ারের চাপে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সিংহেরকোণা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বেলাল গাজীর বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে যায়। এছাড়া বাঁধের নিচু কয়েকটি জায়গা ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এসব জায়গায় এলাকার মানুষ রাতভর মেরামত কাজ চালিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কয়েকশ কাঁচা ঘর-বাড়ি ও দোকানপাট।
কয়রা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম তারিক উজ জামান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ও তুলনামূলক নিচু স্থানে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কাজ করছেন। জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
দাকোপ উপজেলার শিবসা ও ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা তলিয়ে গেছে। উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী ফকিরকোনা, ঝুলন্তপাড়া এবং পন্ডিতচন্দ্র স্কুল সংলগ্ন এলাকা সম্পূর্ণ প্লাবিত। এ অবস্থায় চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ক্ষিতীশ গোলদার বলেন, একই এলাকায় পাঁচটি পয়েন্ট ভেঙে পানি ঢুকেছে। কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় পুরোটা লোনা পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এতো উঁচু জোয়ার আগে দেখিনি। ঢাকি ও শিবসা নদীর মোহনায় কামিনীবাসিয়া পুরাতন পুলিশ ক্যাম্প-সংলগ্ন ওই এলাকায় বেড়িবাঁধের অংশ খুব বেশি দুর্বল ছিল না। তবে বেশ কিছুটা নিচু হওয়ায় উচ্চ জোয়ারের চাপে পানি বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে ভেতরে ঢোকে। এরপর বেড়িবাঁধের পাঁচটি পয়েন্ট ভেঙে যায়।
দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, জোয়ারের পানিতে দাকোপের বেশকিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।
/নূরুজ্জামান/ইমন/
- ৬ মাস আগে রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দেড় লাখ ইউরো দিচ্ছে আইরিশ এইড
- ৬ মাস আগে রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ মানুষের মাঝে বিএনপির ত্রাণ বিতরণ
- ৬ মাস আগে ঘূর্ণিঝড়ে বাগেরহাট উপকূলে ৬৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি
- ৬ মাস আগে বাড়ি ফিরেছেন ঘূর্ণিঝড় রেমালে নিখোঁজ ৩ জেলে
- ৬ মাস আগে রেমাল তাণ্ডব: সুন্দরবনে সুপেয় পানির তীব্র সংকট, ঝুঁকিতে বন্যপ্রাণী
- ৬ মাস আগে ঘূর্ণিঝড় রেমাল: সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১৩১
- ৬ মাস আগে ঘূর্ণিঝড়ের আগে সুন্দরবনে যাওয়া ৩ জেলে এখনও বাড়ি ফেরেননি
- ৬ মাস আগে বিধ্বস্ত উপকূলে খাবার পানির তীব্র সংকট
- ৬ মাস আগে সুন্দরবনে ১১১ হরিণসহ মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১১৯
- ৬ মাস আগে ‘রেমাল’ কী মনে করিয়ে দিলো?
- ৬ মাস আগে সাতক্ষীরার উপকূলে ২৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত
- ৬ মাস আগে গোপালগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সেতু ভেঙে দুর্ভোগ
- ৬ মাস আগে ঘূর্ণিঝড় রেমাল: বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলেন ৩ কোটি ৭ লাখ গ্রাহক
- ৬ মাস আগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দ্রুত পুনর্গঠনে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
- ৬ মাস আগে ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতি ১৭১১০৯ হেক্টর জমির ফসল