ঢাকা     শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৭ ১৪৩১

পিডিবির লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-ছেলে পঙ্গু, বিচার দাবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২২, ২৮ মে ২০২৪  
পিডিবির লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-ছেলে পঙ্গু, বিচার দাবি

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃত্ত (বাঁয়ে)। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন ভুক্তভোগীর বড় ভাই তীর্থ

নিয়মবর্হিভূতভাবে তিন তলার ছাঁদ ঘেষে ১১ হাজার ভোল্টের পিডিবির লাইন স্থাপন করায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন দেবরাজ কর বৃত্ত (১৭) ও তার মা রূপালী কর (৫০)। এ ঘটনায় দায়ীদের বিচারসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীর বড় ছেলে ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেবব্রত কর তীর্থ।

তীর্থ বলেন, আমার বোন দেবযানী কর প্রাপ্তি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের পঞ্চমবর্ষের শিক্ষার্থী। তার সহপাঠী মারিয়া হক স্বর্ণার বাসা ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর শাহী মসজিদ সংলগ্ন এলাকায়। গত ১১ এপ্রিল আমিসহ আমার মা রূপালী কর, বোন দেবযানী কর প্রাপ্তি ও ছোট ভাই দেবরাজ কর বৃত্ত ঈদের দাওয়াতে স্বর্ণাদের বাসায় বেড়াতে যাই। সেখানে দুপুরে খাওয়ার পর স্বর্ণা আমার বড় বোন প্রাপ্তি ও ছোট ভাই বৃত্তকে নিয়ে তাদের তিন তলা বাসার ছাদে ছবি তুলতে যান। সেখানে পিডিবির ১১ হাজার ভোল্টের বিপদজ্জনক লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হন আমার ভাই দেবরাজ কর বৃত্ত। তাদের চিৎকারে ছাদে গিয়ে দেখি, আমার ভাই গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে মাসহ আমরা গুরুতর আহত হই। 

আরো পড়ুন:

এ ঘটনায় চিকিৎসকরা আমার ভাই দেবরাজ কর বৃত্তের ডান হাত এবং মা রূপালী করের বাম পায়ের চারটি আঙ্গুল কেটে ফেলেছেন। তারা বর্তমানে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।এ ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল কোতোয়ালি মডেল থানায় বাসার মালিক মনিফা বেগম ও তার মেয়ে মারিয়া হক স্বর্ণার নাম উল্লেখসহ পিডিবির নাম না জানা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করে মামলা করেছি।  

তীর্থের অভিযোগ, বিল্ডিং কোড অমান্য করা, বাসার তিন তলার ছাদ ঘেঁষে নিয়মবর্হিভূতভাবে ১১ হাজার ভোল্টের পিডিবির লাইন নির্মাণ করা এবং বাসার মালিক পক্ষ আমাদের সর্তক না করে ছাদে নিয়ে যাওয়ার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি।

দুর্ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মামলার আসামি ও বাসার মালিক মনিফা বেগম জানান, তারা আমাদের বাসায় বেড়াতে এসে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এতে আমার দায় আছে বলে মনে করি না। তবে, প্রথম পিডিবির ১১ হাজার ভোল্টের লাইনটি আমার ছাঁদের কোমর সমান উচু দিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। পরে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিভাগ একটি এঙ্গেল ব্যবহার ওই লাইন আমার ছাঁদের আনুমানিক ৬ ইঞ্চি দূরে সরিয়ে নেয়। ওই দুর্ঘটনার পরে আবারও লাইনটি তিন থেকে চার ফুট দূরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (উত্তর) নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়টি আমি শুনেছি। ওই লাইন দূরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. মতিউর রহমান বলেন, ঘটনার তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। এ ঘটনায় দায়ী কে তা এখনই বলা যাবে না।  

মিলন/মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়