ঢাকা     শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৮ ১৪৩১

গোপালগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সেতু ভেঙে দুর্ভোগ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০৮, ৩০ মে ২০২৪  
গোপালগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সেতু ভেঙে দুর্ভোগ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রাম-সিলনা সড়কে শির খালে নির্মিত একটি সেতু ভেঙে গেছে। ফলে গত চারদিন ধরে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে দুই উপজেলার মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সরেজমিনে দেখা গেছে, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রাম-সিলনা সড়কে সিলনা বাজার সংলগ্ন শির খালের উপর নির্মিত সেতুটি বেদগ্রাম-বর্ণি সড়কে সদর উপজেলার একাংশকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

১৯৯৪ সালে ২৭ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ মিটার প্রস্থের এ সেতু নির্মাণ করা হয়। পরে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ১২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে তা মেরামত করা হয়। কিন্তু সোমবার সকালে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সেতুর পাশের একটি গাছ উপড়ে মাটি সরে গেলে ও তীব্র স্রোতে সেতুটি ভেঙে পড়ে। ফলে বেদগ্রাম-বর্ণি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।

আরো পড়ুন:

সড়কটি দিয়ে টুঙ্গিপাড়ার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জেলা শহর, কোটালীপাড়া উপজেলা এবং সদর উপজেলার অর্ধ লাখ মানুষ টুঙ্গিপাড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে থাকে। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। ফলে সদর ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় যাতায়াতে অন্তত ১০ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হচ্ছে যাত্রীদের।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামের আকবর শেখ বলেন, ‘প্রতিদিন আমি এই সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করি। কিন্তু গত সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে সেতুটি ভেঙে গেছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। অতি প্রয়োজনে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এ ভাঙা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। দ্রুত সেতু তৈরির দাবি জানাই।’

স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ বালা বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে যাওয়ার ফলে কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হয়েছে। এমনকি এখান দিয়ে কোনো ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। ফলে ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া, হাটবাজারে যাওয়াসহ সব কিছুতেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’

শ্যামল কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘গোপালগঞ্জ সদর ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বাসিন্দারা এ সেতুটি ব্যবহার করে থাকে। প্রতিদিন অর্ধ লাখের বেশি মানুষ এ সেতুটি ব্যবহার করে। কিন্তু চারদিন পার হলেও যাতায়াতের কোন বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়নি। এতে জনসাধারণ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।’

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন বলেন, “প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সারা দেশের মতো গোপালগঞ্জেও কিছু ক্ষতি হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদরের বেদগ্রাম থেকে টুঙ্গিপাড়ার বর্ণী ইউনিয়নের সংযোগ রাস্তায় এলজিইডি নির্মিত একটি সেতু ভেঙে পড়েছে। এ কারণে গোপালগঞ্জ এবং টুঙ্গিপাড়ার একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ওই স্থানে সেতু পুনর্নির্মাণের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

গোপালগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহামুদ হাসান বলেন, “গোপালগঞ্জ সদরের বেদগ্রাম-সিলনা সড়কের একটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে এলজিইডি থেকে একটি বেইলি ব্রিজ অথবা অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হবে; যাতে মানুষ এবং হালকা যানবাহন এখান দিয়ে চলাচল করতে পারে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

বাদল/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়